০২ জুলাই ২০২১, ২০:২৭

এসি ল্যান্ডের লাঠির আঘাতে কলেজ শিক্ষকের হাত ভাঙার অভিযোগ

শিক্ষককে পিটিয়ে হাত ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ  © প্রতীকী ছবি

রাজশাহীর বাগমারায় লকডাউন নিশ্চিত করতে গিয়ে এক কলেজ শিক্ষককে পিটিয়ে হাত ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এসি ল্যান্ডের (উপজেলা সহকারী কমিশনার-ভূমি) বিরুদ্ধে। ওই শিক্ষকের নাম আবদুল আজিজ। তিনি উপজেলার সাধনপুর পঙ্গু ও শিশু নিকেতন ডিগ্রি কলেজের শিক্ষক।

গতকাল বৃহস্পতিবার ( ১ জুলাই) এই ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন আবদুল আজিজের স্ত্রী বেবী খানম। এ বিষয়ে তিনি গণমাধ্যমকে জানান, এসি ল্যান্ড মাহমুদুল হাসান তার স্বামীকে লাঠি দিয়ে আঘাত করেছেন। এ ঘটনায় আজ শুক্রবার সকালে তিনি বাড়িতে এসে ক্ষমাও চেয়েছেন।

বেবী খানম জানান, তার স্বামী আবদুল আজিজ ডায়াবেটিসের রোগী। তিনি বিকেলে হাঁটতে বের হয়েছিলেন। সন্ধ্যা ৬টার দিকে তিনি বাড়িতে ফিরছিলেন। সে সময় পুলিশ ও সরকারি কর্মকর্তারা সবাইকে বাড়িতে ফেরার জন্য সিকদারী বাজার থেকে লোকজনকে ধাওয়া করেন। আজিজকে একা দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে তার পরিচয় জিজ্ঞাসা করেন। তিনি কলেজ শিক্ষক এটি জানার পরে এসি ল্যান্ড তাকে বাড়ি ফিরে যেতে বলেন। বাড়ির দিকে ফেরার জন্য তিনি হাঁটতে শুরু করলে এসি ল্যান্ড তাকে পেছন থেকে লাঠি দিয়ে আঘাত করেন।

গতকাল সন্ধ্যায় আজিজকে হাসপাতালে নেওয়ার মতো পরিস্থিতি ছিল না। স্থানীয় এক ব্যক্তি তার হাত ব্যান্ডেজ করে দেন। আজ সকালে হাসপাতালে নেওয়ার পর তার বাম হাতে প্লাস্টার করা হয়েছে।

বেবি খানম জানান, সকালে ইউএনও তাদের বাড়িতে আসেন। আজিজকে হাসপাতালে নেওয়ার সময় তিনি সেখানে ছিলেন। ইউএনও তাদের সঙ্গে হাসপাতাল থেকে বাড়িতেও আসেন। এরপর এসি ল্যান্ডও তাদের বাড়িতে আসেন।

তিনি বলেন, এসি ল্যান্ড ক্ষমা চেয়েছেন। তিনি বলেছেন, আমরা যদি তাকে ক্ষমা না করি, তবে তার চাকরি হুমকির মুখে পড়বে। তাই, আমরা তাকে ক্ষমা করে দিয়েছি। আমাদের আর কোনও অভিযোগ নেই।
 
তবে, এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এসি ল্যান্ড মাহমুদুল হাসান। গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে তিনি জানান, লকডাউন কার্যকর করতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান চলাকালে তিনি লোকজনকে ধাওয়া দিয়ে বাড়িতে পাঠানোর সময় কলেজ শিক্ষক আবদুল আজিজ মাটিতে পড়ে গিয়ে আহত হন। এ ঘটনায় ‘ভুল বোঝাবুঝি’ হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। এছাড়া ক্ষমা চাওয়ার বিষয়টিও অস্বীকার করেন এসি ল্যান্ড মাহমুদুল হাসান।
 
এদিকে, ইউএনও শরীফ আহমেদও এসি ল্যান্ডের বিরুদ্ধে কলেজ শিক্ষককে পেটানোর অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি জানান, কলেজ শিক্ষক আব্দুল আজিজের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে তিনি তাদের বাড়িতে গিয়েছিলেন এবং অনেকটা সময় তাদের সঙ্গে ছিলেন।

গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, গ্রামাঞ্চলের মানুষ স্বাস্থ্যবিধি মানতে চান না। এখানে লকডাউন কার্যকর করা একটি কঠিন কাজ। লকডাউন কার্যকর করতে গিয়ে কঠোর হওয়ায় এই ঘটনাটি ঘটেছে।