লকডাউন শেষে সাধারণ ছুটির কথা ভাবছে সরকার
করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে আগামী বৃহস্পতিবার থেকে সাধারণ ছুটির কথা চিন্তা করছে সরকার। ঘন বসতি ঢাকাকে বাঁচাতে আশপাশের সাতটি জেলায় লকডাউন দিয়েও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় জাতীয় পরামর্শক কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী আজ থেকে সারাদেশে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত লকডাউনের ঘোষণা দিয়েছে সরকার।
এই লকডাউন শেষ হলে সরকারের নীতি-নির্ধারণী মহলের একাধিক উচ্চপর্যায়ের সূত্রের সঙ্গে কথা বলে সাধারণ ছুটির চিন্তার কথা জানা গেছে। তবে সরকারি প্রজ্ঞাপনে ঠিক ‘সাধারণ ছুটি’ ঘোষণা করা হবে কি না তা নিয়ে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।
আজ সোমবার প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে জাতীয় সংসদে মন্ত্রিসভার বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠক শেষে বিকেলে মন্ত্রিপরিষদসচিব সচিবালয়ে সাংবাদিকদের মন্ত্রিসভা বৈঠকের বিষয়সংক্রান্ত তথ্য জানা যাবে। সেই সময় আগামী বৃহস্পতিবারের কঠোর লকডাউনের বিষয়েও কিছু ইঙ্গিত দিতে পারেন বলে জানা গেছে।
সাধারণ ছুটি ঘোষণা করলেও দেশ চালাতে সরকারি অনেক গুরুত্বপূর্ণ দপ্তর খোলা রাখতে হয়। এসব জায়গায় নিয়োজিত সরকারি কর্মচারীদের সাধারণ ছুটির মধ্যে আলাদা বেতন-ভাতা দিতে হবে। যাবতীয় বিষয় বিবেচনা করে বর্তমানে সরকার কৃচ্ছ তা সাধনের নীতিতে থাকায় সরকারি ঘোষণায় ‘সাধারণ ছুটি’ শব্দটি না-ও থাকতে পারে। তবে কার্যত সাধারণ ছুটির মতোই কড়াকড়ি আরোপ হবে। অর্থাৎ জরুরি প্রয়োজনের সরকারি-বেসরকারি অফিস ছাড়া সব ধরনের অফিস-আদালত বন্ধ থাকবে।
এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, গত বছরের এপ্রিল ও মে মাসে যেমন অবস্থা ছিল, তেমনি অবস্থায় না গেলে করোনাভাইরাসের বর্তমান সংক্রমণের উল্লম্ফন ঠেকানো যাবে না। সংক্রমণের চেইন ভাঙতে সাধারণ ছুটিই একমাত্র ভরসা।
তবে এবারের সাধারণ ছুটিতে কিছু ভিন্নতা থাকবে বলে জানা গেছে। গতবারের সাধারণ ছুটির মধ্যে জরুরি সেবার সরকারি প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, হিসাব বিভাগ, ওষুধ, গণমাধ্যম, খাদ্যপণ্য, কাঁচাবাজার, পোল্ট্রি, কৃষি, ব্যাংক ইত্যাদি বিষয়গুলো সংক্রান্ত যান ও ব্যক্তিদের চলাচলে বাধা ছিল না। এবার এগুলোর সঙ্গে রপ্তানিমুখী গার্মেন্টশিল্প, বন্দর, বিমানবন্দর, আন্তর্জাতিক বিমান, প্রবাসীদের দেশের বাইরে যাওয়া-আসার বিষয়গুলোও লকডাউনের আওতামুক্ত রাখার কথা চিন্তা করা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে সরকারের একজন সচিব নাম প্রকাশ না করার শর্তে গতকাল রাতে বলেন, ‘সাধারণ ছুটির মতোই অবস্থা থাকবে। সাধারণ ছুটি ঘোষণা হবে কি না তা বলতে পারছি না।’
উল্লেখ্য, কঠোর লকডাউনের কথা গত শনিবার দুপুরে বলেছিলেন সরকারের প্রধান তথ্য অফিসার সুরথ কুমার সরকার। আজ সোমবার (২৮ জুন) থেকে সেটা কার্যকর হওয়ার কথা থাকলেও এখন সেটা বৃহস্পতিবার থেকে কার্যকরের সিদ্ধান্ত হয়েছে।