২১ জুন ২০২১, ১২:২৫

ফেসবুকে পাল্টাপাল্টি স্ট্যাটাস দুই মন্ত্রীর

ফেসবুকে পাল্টাপাল্টি স্ট্যাটাস দুই মন্ত্রীর  © টিডিসি ফাইল ফটো

কিছুদিন আগে ছিনতাইকারীর হাতে নিজের মোবাইল হারিয়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। এবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেনকে নিয়ে পাল্টাপাল্টি স্ট্যাটাস দিয়ে আবারো আলোচনায় তিনি। সুনামগঞ্জ থেকে ছাতক পর্যন্ত প্রস্তাবিত রেললাইন নিয়েই মূলত এই স্ট্যাটাস।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন তার ফেসবুক পেজে গত ১৪ জুন এক স্ট্যাটাস বলেন, সিলেটের স্থানীয় একটি পত্রিকায় প্রকাশ করা হয়েছে যে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নানর সঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সম্পর্কের বিরোধে সিলেটের অনেক উন্নয়ন ব্যাহত হচ্ছে। এমন খবর পড়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন তাদের দুজনের মধ্যে কোনো বিরোধ নেই। দুজনের সম্পর্কে ফাঁটল ধরাতে এমন প্রতিবেদন পত্রিকায় প্রকাশ করা হয়েছে।

এসময় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আরও লিখেন, মান্নান আমার বন্ধু, মান্নানের সাথে আমার সম্পর্ক ৫০ বছরের অধিক। আমি এবং মান্নান সুখে–দুঃখে সব সময়ই ছিলাম এবং আছি, ভবিষ্যতেও আমৃত্যু থাকব বলেই আশা করি। সংবাদপত্রে প্রকাশিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং বানোয়াট। যে বা যারা এটি প্রচার করছেন, তারা হয়তোবা কোনো বিশেষ বা অসৎ উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য করছেন। ফেসবুকে এই স্ট্যাটাসটির প্রয়োজন আছে বলে মনে করছি না, তবে একটি বিশেষ কারণে দিচ্ছি আর তা হলো আমার এবং মান্নানের স্থানীয় অনেক শুভাকাঙ্ক্ষী রয়েছেন আর তাঁদের মধ্যে যাতে কোনো বিভ্রান্তির সৃষ্টি না হয়।

পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ফেসবুক স্ট্যাটাস দেখে পরিকল্পনামন্ত্রীও রোববার পাল্টা স্ট্যাটাস দেন। তিনি সেখানে বলেন, সুনামগঞ্জ থেকে ছাতক পর্যন্ত প্রস্তাবিত রেললাইন নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেনের ভূমিকায় বিস্মিত হয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। তিনি বলেছেন, দুজনের মধ্যে দীর্ঘ ৫০ বছরের বন্ধুত্ব, একই সঙ্গে মন্ত্রিসভার সহকর্মী হয়েও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ভূমিকা কিছুতেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। রোববার (২০ জুন) বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে ‘পরিকল্পনামন্ত্রীর দপ্তর’ফেসবুক পেজ থেকে এই স্ট্যাটাস দেওয়া হয়েছে।

পরিকল্পনামন্ত্রী আরও বলেন, এটা সত্য যে ড. মোমেনের সঙ্গে আমার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক দীর্ঘ ৫০ বছরের। কিন্তু তিনি সুনামগঞ্জের পাঁচজন সংসদ সদস্যের পাশে রয়েছেন উল্লেখ করে রেলমন্ত্রীর কাছে যে আধা সরকারি পত্র (ডিও) দিয়েছেন, সেটি আমাকে বিস্মিত করেছে। তিনি যে পাঁচজন এমপির পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন, সেখানে একজন জাতীয় পার্টির এমপিও রয়েছেন।

আব্দুল মোমেন ভালো করেই জানেন, আমিও (মান্নান) সুনামগঞ্জের একজন সংসদ সদস্য। সুনামগঞ্জের সঙ্গে ছাতকের রেললাইন নির্মাণ নিয়ে তিনি যেমন অবগত, ঠিক তেমনি বিষয়টি আমিও অবগত। আমি যতটুকু জানি, তাঁর বর্ণিল জীবনে তিনি কখনো সুনামগঞ্জে যাননি। সুনামগঞ্জে কখনো তাঁর পা পর্যন্ত পড়েনি। অথচ তিনি রেললাইন নির্মাণ নিয়ে একটি পক্ষের অবস্থান নিয়েছেন। অন্য কেউ হলে এই পরিস্থিতিতে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করতেন। বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইতেন। কিন্তু আমাদের দীর্ঘ ৫০ বছরের বন্ধুত্ব একই সঙ্গে আমরা দুজনেই মন্ত্রিসভার সদস্য অথচ তিনি আমার সঙ্গে এ বিষয়ে এতটুকু যোগাযোগ করেননি। আমার সঙ্গে কথা না বলে অন্য পাঁচজন সংসদ সদস্যের পক্ষ নিয়ে রেলমন্ত্রীকে ডিও লেটার পাঠানো কিছুতেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমার সহকর্মী, তিনি চাইলে আমার সঙ্গে কথা বলতে পারতেন। রেললাইন নির্মাণ নিয়ে যে জটিলতা তৈরি হয়েছে, সেটি সুরাহা হওয়া দরকার। বলেও স্ট্যাটাসে উল্লেখ করেন তিনি।