আজকের দিনটি শুধু বাবাদের জন্য
প্রশ্ন উঠতেই পারে, বাবাকে ভালোবাসার জন্যে কী শুধুই একটি দিন? বাবার প্রতি সন্তানের চিরন্তন ভালোবাসার প্রকাশ তো প্রতিদিনই ঘটে। প্রশ্ন উঠুক, তবু পৃথিবীর মানুষ বছরের একটা দিন বাবার জন্য রেখে দিতে চায়, যেমনটা রাখা হয় মায়ের জন্য। তাই আজ বাবা দিবস, শুধু বাবার জন্য একটি বিশেষ দিন।
বিশ্বের প্রায় ৫২টি দেশে এ দিবসটি পালিত হয়। পিতার প্রতি সন্তানের ভালোবাসা প্রকাশের জন্য দিনটি বিশেষভাবে উৎসর্গ করা হয়ে থাকে। প্রতি বছর জুনের তৃতীয় রবিবার পালিত হয় ‘বাবা দিবস’। এই ধারাবাহিকতায় এবছর ২০ জুন দিবসটি পালিত হচ্ছে।
‘বাবা দিবস’ পালন শুরু হয় গত শতাব্দীর শুরুর দিকে। উদ্দেশ্য একটাই- পৃথিবীর সব বাবাদের প্রতি সন্তানদের শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা প্রকাশ। ধারণা করা হয়, ১৯০৮ সালের ৫ জুলাই সর্বপ্রথম ‘বাবা দিবস’ পালিত হয় আমেরিকার পশ্চিম ভার্জেনিয়ার ফেয়ারমন্টের এক গির্জায়।
পৃথিবীব্যাপী ‘বাবা দিবস’ উদযাপন হয় ব্যাপক আয়োজনে মধ্য দিয়ে। তবে শুরুর দিকে কিন্তু এতোটা আয়োজন ছিলো না। আসলে ‘মা দিবস’ নিয়ে মানুষ যতটা উৎসাহ দেখাতো, বাবা দিবসে তেমনটা দেখাতো না। ধীরে ধীরে অবস্থার পরিবর্তন ঘটেছে। ১৯১৩ সালে আমেরিকান সংসদে বাবা দিবসকে ছুটির দিন ঘোষণা করার জন্য একটা বিল উত্থাপন করা হয়। ১৯২৪ সালে তৎকালীন আমেরিকান প্রেসিডেন্ট ক্যালভিন কলিজ বিলটিতে পূর্ণ সমর্থন দেন। অবশেষে ১৯৬৬ সালে প্রেসিডেন্ট লিন্ডন বি. জনসন ‘বাবা দিবস’কে ছুটির দিন হিসেবে ঘোষণা করেন।
অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও প্রতি বছর জুন মাসের তৃতীয় রবিবার পালিত হয় ‘বাবা দিবস’। এ দিনকে ঘিরে সন্তানরা বাবার জন্য করেন নানা আয়োজন। নতুন প্রজন্মের কাছে মা দিবস-বাবা দিবসের ধারণাগুলো দিন দিন বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। হাজার কষ্ট সয়ে তিলে তিলে যে সন্তানকে বড় করেছেন একজন বাবা, তাকে ঘিরেই এদিন হয় ব্যতিক্রমী উৎসব।
দিবসটিকে সামনে রেখে পাঞ্জাবির দোকান, কার্ডের দোকান, ফুলের দোকানে, উপহারের দোকানে ভিড় জমান সন্তানরা। বাবাকে এই দিবসে শ্রেষ্ঠ উপহার দেওয়া নিয়ে চলে জল্পনা-কল্পনা। সব বয়সীরাই এই দিনটিতে তার বাবাকে একটি সুন্দর উপহার কিংবা একটু সঙ্গ দেওয়ার জন্য আগে থেকেই নানা পরিকল্পনা করে থাকেন।
ইদানিং ‘বাবা দিবস’ ছড়িয়ে গেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও। অনেকেই বাবার সঙ্গে তোলা ছবিকে নিজের প্রোফাইল বা কাভার ছবিতে রাখেন, স্ট্যাটাস লিখে প্রকাশ করেন বাবার জন্য ভালোবাসা। যাদের বাবা বেঁচে নেই, তারাও এদিন করেন স্মৃতিচারণ।
সব মিলিয়ে ‘বাবা দিবস’ উদযাপন এখন বেশ প্রচলিত। সবাই এদিনটিতে চান বাবাকে না বলা অনেক কথা বলতে, বাবার প্রতি নিজের শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা প্রকাশ করতে। এদিন বাবাকে জানিয়ে দিতে চান- ভালোবাসি বাবা!