শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলতে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা গ্রহণের তাগিদ

শিক্ষার্থী
শিক্ষার্থী  © ফাইল ছবি

দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের চলমান ছুটি আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। শনিবার (১২ জুন) শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে এ তথ্য জানানো হয়। এছাড়া শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয় খোলা হবে বলে আগেই জানানো হয়েছে। কিন্তু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি বারবার বাড়ায় উদ্বিগ্ন শিক্ষার্থী-অভিভাবক থেকে শুরু করে শিক্ষক ও শিক্ষাবিদরা।

শিক্ষাবিদ ও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনা পরিস্থিতি কতদিন চলমান থাকবে তা কেউ নির্দিষ্ট করে বলতে পারছে না। জনসংখ্যার বড় অংশকে গণটিকাদানের আওতায় না আনতে পারা পর্যন্ত করোনা পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসবে না। সেটার জন্য এক থেকে দুই বছর বা তার বেশি সময়ও লাগতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে করোনা পরিস্থিতি দীর্ঘ হলে তা মেনে নিয়ে কিভাবে সামনে আগানো যায় সেই চিন্তা করতে হবে। এজন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে সরাসরি পাঠদান ও পরীক্ষার বিকল্প ব্যবস্থা বিষয়ে পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। এজন্য অনির্দিষ্ট সময় ধরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ না রেখে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা করে কীভাবে সচল করা যায়, সেদিকে গুরুত্ব দিতে হবে। সবাইকে একসঙ্গে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে না এনে প্রথমে এলাকাভিত্তিক এবং শ্রেণিভিত্তিক ক্লাসের ব্যবস্থা করারও পরামর্শ এসেছে।

আরো পড়ুন অপরিকল্পিত ছুটির পদক্ষেপ দেখে হতাশ সাবেক শিক্ষা কর্মকর্তা

জানা গেছে, করোনার কারণে গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে বন্ধ রয়েছে দেশের সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এতে তিন কোটি ৬০ লাখ শিক্ষার্থী চরম ক্ষতির মুখে পড়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় নিয়মিত বিরতিতে বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের মেয়াদ বাড়াচ্ছে। এতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে যারা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার অপেক্ষায়, তাঁরা আশাহত হচ্ছেন। শিক্ষাবিদেরা ধাপে ধাপে খোলার পরামর্শ দিলেও মন্ত্রণালয় চায় একসঙ্গে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলতে। কিন্তু সেটিও বাস্তবায়ন করা যাচ্ছে না। আবার শিক্ষার্থীদের টিকা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় খোলার পরিকল্পনা বাস্তবায়নের কাজেও খুব একটা গতি নেই। করোনা দীর্ঘস্থায়ী হলে বিকল্প ব্যবস্থা ও সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা কী, তা জানিয়ে দেওয়া উচিত বলেও মনে করছেন শিক্ষক ও শিক্ষাবিদেরা।

অনির্দিষ্ট সময় ধরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা যাবে না উল্লেখ করে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক মনজুর আহমদ গণমাধ্যমকে বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয় এই পরিস্থিতি থেকে বেরোনোর পথ খোঁজে পাচ্ছে না। কিন্তু পথ তৈরি করতে হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের পরিস্থিতি থেকে বের হতে হলে ধাপে ধাপে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলতে হবে, একসঙ্গে নয়।

তিনি বলেন, পর্যাপ্ত স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও নিরাপত্তার ব্যবস্থা করে সংক্রমণ নেই বা একেবারে কম এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে পর্যবেক্ষণ করতে হবে। শিক্ষার্থীদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে গতানুগতিক চিন্তার বাইরে গিয়ে পরিকল্পনা নেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।

আরো পড়ুন স্কুল-কলেজের ছুটি বাড়ল ৩০ জুন পর্যন্ত


সর্বশেষ সংবাদ