বৃহস্পতিবারের মধ্যেই ছুটি নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নতুন বক্তব্য
করোনার কারণে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকা দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর ছুটি আরও এক দফা বাড়ছে। সরকারের দায়িত্বশীল পর্যায় থেকে ইতিমধ্যে সে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। মফস্বলেও করোনার ‘ডেল্টা’ ধরন ছড়িয়ে পড়ায় এবং শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়া সম্ভব হয়নি। ফলে আগামী ১৩ জুন খোলার ঘোষণা থাকলেও খুলছে না শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ছুটি আরেক দফায় কতদিন বাড়বে তা চলতি সপ্তাহেই জানিয়ে দেওয়া হবে। ইতিমধ্যে লকডাউন আগামী ১৬ জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। এ ছাড়া সংক্রমণ ৫ শতাংশের নিচে নামলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু সোমবারও দেশে করোনা শনাক্তের হার ছিল সাড়ে ১১ শতাংশ। এটি ৪১ দিনের মধ্যে সর্বোচ্চ।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান গণমাধ্যমকে বলেন, করোনাভাইরাসে সংক্রমণ কমছে না, ঊর্ধ্বমুখী হচ্ছে। এবার সীমান্তবর্তী জেলাগুলোয় সংক্রমণ বেশি। সংক্রমণের হার ৫ শতাংশের নিচে না নামলে জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা যাবে না বলে পরামর্শ দিয়েছে।
সে কারণে অপেক্ষা করতে হচ্ছে জানিয়ে মন্ত্রণালয়ের এই কর্মকর্তা বলেন, কতদিনের জন্য ছুটি বাড়ানো হবে, তা দু-একদিনের মধ্যে জানিয়ে দেওয়া হবে।
মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় খুলে দেওয়ার ব্যাপারে চাপ আছে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও সুশীল সমাজের। এ পরিস্থিতিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ১৩ জুন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার ইঙ্গিত দেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। তবে পরে গত ২৯ মে এক অনুষ্ঠানে তিনি জানান, করোনা সংক্রমণ ৫ শতাংশের নিচে না আসলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া উচিত নয়। এ সময় শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টিকে গুরুত্ব দেন তিনি।
কর্মকর্তারা জানান, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইডলাইনে সংক্রমণ ৫ শতাংশের নিচে নামলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু গত কয়েকদিন ধরেই ১০ শতাংশের ওপরে রয়েছে, যা ক্রমেই বাড়ছে। সীমান্তবর্তী জেলাগুলোর পরিস্থিতি বেশ নাজুক অবস্থায় রয়েছে।ভারতের মতো সংকট যাদে তৈরি না হয়, সেজন্য সতর্কতা অবলম্বন করছেন দায়িত্বশীলরা। এ জন্য ছুটি বাড়ানোর ব্যাপারে চিন্তাভাবনা চলছে।
অবশ্য সূত্র জানিয়েছে, ১৩ জুন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুললেও কেবল এসএসসি ও এইচএসসি এবং প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষে আসার অনুমতি দেওয়া হতো। অন্য শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য ভিন্ন পরিকল্পনা রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ও শিক্ষার্থীদের টিকা না দেওয়া পর্যন্ত খুলবে না। কিন্তু করোনার সংক্রমণের কারণেও তাও সম্ভব হচ্ছে না।
এ অবস্থায় করোনা বিষয়ক জাতীয় কারিগরি কমিটির মতামতের ভিত্তিতে দু-একদিনের মধ্যে ছুটির বিষয়ে নতুন বক্তব্য জানিয়ে দেবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। করোনার কারণে গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে বন্ধ রয়েছে দেশের সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।