০৪ জুন ২০২১, ০৮:১৪

দাম প্রকাশ করায় বেশি দামে সিনোফার্মের টিকা কিনতে হবে!

সিনোফার্মের টিকা  © সংগৃহীত

সিনোফার্মের টিকার দাম প্রকাশ করে দেওয়ায় বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েছে চীন। বাণিজ্যিক স্বার্থে কোন অবস্থাতেই দাম প্রকাশ করতে নিষেধ করেছিল দেশটি। কিন্তু বাংলাদেশের গণমাধ্যমে টিকার দাম প্রকাশ করে দেওয়ায় চীনের সাথে অন্যান্য রাষ্ট্রের বাণিজ্য সংকট তৈরী হয়েছে। পৃথিবীর বিভিন্ন রাষ্ট্রে তারা বিভিন্ন দামে টিকা সরবরাহ করে থাকে তাই দাম প্রকাশ করতে নিষেধ করে তারা। চীনের সাথে দেড় কোটি ডোজ টিকার চূড়ান্ত চুক্তি এক সপ্তাহের মধ্যে হওয়ার কথা ছিল।

জানা যায়, বাংলাদেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকায় সিনোফার্ম ১০ ডলার মূল্যে টিকা সরবরাহে সম্মত হয়েছিল। বাংলাদেশের মিডিয়ায় এই খবর প্রকাশের পর শ্রীলঙ্কা প্রথম আপত্তি জানায়। বলে বাংলাদেশকে ১০ ডলারে টিকা দেয়া হলে শ্রীলংকার কাছে ১৫ ডলার চাওয়া হচ্ছে কেন? বিষয়টি এখানে শেষ হয়ে যায়নি। চীন বাংলাদেশের কাছে এক কূটনৈতিক পত্রে জানতে চেয়েছে-কেন দাম প্রকাশ করা হলো। বলা হয়েছিল দাম প্রকাশ করা হলে তারা বাণিজ্যিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

চীন বলেছে, তাদের আশঙ্কা সত্যি হয়েছে। অনেক দেশই তাদের কাছে আপত্তি জানিয়েছে। এই পত্র যখন এলো তখন বাংলাদেশ দেড় কোটি ডোজ টিকা কেনার আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব পাঠিয়েছে। বিব্রতকর এই পরিস্থিতি সামাল দিতে কূটনৈতিকভাবে চেষ্টা চলছে। সর্বশেষ খবর চীন এখনো সায় দেয়নি।

উল্লেখ্য যে, গত ২৭শে মে মন্ত্রিসভা কমিটি সিনোফার্মের টিকা কেনার প্রস্তাবে সম্মত হয়। এর পরপরই মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. শাহিদা আখতার এক সংবাদ ব্রিফিং-এ কত দামে টিকা কেনা হয়েছে তা প্রকাশ করেন। এ নিয়ে সরকারিভাবে তদন্ত হচ্ছে-কেন তিনি গোপনীয়তা রক্ষা না করে নিজ দায়িত্বে মিডিয়াকে বলে দেন। বিষয়টি নিয়ে তদন্তের এক পর্যায়ে ড. শাহিদা আখতারকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে ওএসডি করা হয়েছে। চীনের তরফে ইতোমধ্যেই বলা হয়েছে এখন কিনতে হলে ১৫ ডলার দিতে হবে। বাংলাদেশ টিকার এই সংকটকালে কি করবে? ১৫ ডলার করেই কি কিনতে রাজি হবে?

চীন ছাড়া অন্য কোন দেশ দেড় কোটি ডোজ টিকা দিতে পারছে না। ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট অপরাগতা জানিয়ে গত মাসেই চিঠি পাঠিয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী ৩ কোটি ডোজ টিকা দেয়ার কথা ছিল। মাত্র ৭০ লাখ ডোজ দেয়ার পর সেরাম সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি রফতানি বন্ধ করে দেয়ার নির্দেশ দেয়ার পর অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে। শুধু বাংলাদেশ নয় এশিয়া-আফ্রিকার অনেক দেশ সংকটে পড়েছে। এমন অবস্থার মধ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলে দেয়ার দাবি জোরালো হচ্ছে। বিক্ষোভ-মানববন্ধন করছেন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার সারা দেশে এই দাবিতে কর্মসূচি পালন করেছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ।

সূত্র: ভোয়া বাংলা