লকডাউন বাড়লে ১৩ জুন কি খুলবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান?
দেশে চলমান লকডাউন শেষ হচ্ছে আজ রোববার (৩০ মে) রাত ১২টায়। এই লকডাউন বাড়িয়ে আজই প্রজ্ঞাপন জারি করা হতে পারে। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা এই লকডাউন আরও অন্তত দুই সপ্তাহ বাড়ানোর সুপারিশ করেছেন। লকডাউনের আগের শর্তাবলির সঙ্গে নতুন শর্তও যুক্ত হচ্ছে। এতে সীমান্তবর্তী জেলার মানুষের চলাচলে কঠোরতা থাকতে পারে বলে জানা গেছে।
এ পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠেছে, আগামী ১৩ জুনও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলবে কি-না। গত ২৬ মে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের চলমান ছুটি ও শিক্ষা সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলতে ভার্চ্যুয়ালি এক সংবাদ সম্মেলন শিক্ষামন্ত্রী বলেছিলেন, করোনা পরিস্থিতি অনূকুলে থাকলে আগামী ১৩ জুন থেকে দেশের সকল মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
এ সময় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন বলেছিলেন, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সাথে মিল রেখে আমরাও ১৩ জুন থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো খুলে দিতে চাই। ফলে ওই দিন থেকেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলবে বলে অনেকে আশা করছিলেন। তবে কিছু অঞ্চলে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় ফের লকডাউন বাড়ানোর চিন্তা করছে সরকার।
করোনা সংক্রমণের এ অবস্থায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ১৩ জুন খুলবে কিনা তা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। সর্বশেষ ঘোষণা অনুযায়ী আগামী ১২ জুন পযর্ন্ত বন্ধ থাকবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ইতিমধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠাগুলোকে প্রস্তুতি নেওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এরমধ্যেই শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, দেশে চলমান করোনাভাইরাসের পরিস্থিতির মধ্যে আগামী ১৩ জুন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান (স্কুল-কলেজ) খুলে দেয়া হবে, না-কি বন্ধই থাকবে এ বিষয়ে দ্বিমুখী চাপে রয়েছে সরকার। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ১৩ জুন খুলে দেয়ার চেষ্টা থাকলেও খুলে দেয়ার মেসেজ থেকে বন্ধ রাখার মেসেজ বেশি পাওয়া যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে। শনিবার (২৯ মে) রাতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে বলেন, সীমান্তবর্তী কয়েকটি জেলায় করোনার ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে সরকার উদ্বিগ্ন। এ কারণে ওই সব জেলার মানুষের চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হতে পারে। এ বিষয়ে রোববারই প্রজ্ঞাপন জারি হতে পারে বলে জানান তিনি।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার চেয়ে বন্ধ রাখার মেসেজ বেশি পাচ্ছি
জানা গেছে, সীমান্তের জেলাগুলোয় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ দ্রুত বাড়েছে। শনাক্তের হার অস্বাভাবিক হওয়ায় গত ২৫ মে থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জে বিশেষ লকডাউন চলছে। এ অবস্থায় লকডাউন বাড়ানো নিয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত জানাবে। দুই মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা মনে করছেন, ঢিলেঢালা লকডাউন নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা হলেও সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করতে বেশ কাজ করছে। সে জন্য এটি চালু থাকা প্রয়োজন বলেন তারা মনে করছেন।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ এম এ ফয়েজ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘সংক্রমণ কম থাকলেও এখনো ঝুঁকিমুক্ত নই আমরা। এখনও পরিস্থিতি দ্বিতীয় ঢেউয়ের মধ্যেই আছে। তাই বিধি-নিষেধ তোলার সুযোগ নেই। বরং সীমান্ত এলাকাসহ বিভিন্ন বিষয়ে নজরদারি বাড়ানো জরুরি। সংক্রমণ পাঁচ শতাংশের নিচে নামলে লকডাউন থেকে বেরিয়ে আসার বিষয়টি চিন্তা করা যায়।
এর আগে সব ধরনের গণপরিবহন অর্ধেক যাত্রী নিয়ে চলাচলের সুযোগ দেওয়া হয়। এ শর্ত রেখে ৩০ মে পর্যন্ত বাড়ানো হয় লকডাউন। হোটেল-রেস্তোরাঁ ও খাবার দোকানও খোলার সুযোগ রাখা হয়েছে। গত বছরের মার্চ থেকে কয়েক দফায় বন্ধ রাখা হয় অফিসও।