বিশ্ববিদ্যালয় খোলা ও টিকা দেওয়া নিয়ে একমত নয় মন্ত্রণালয়-ইউজিসি
করোনার কারণে প্রায় ১৫ মাস ধরে বন্ধ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়। তবে শিগগিরই আবাসিক হলের এক লাখ ১০ হাজার শিক্ষার্থীকে টিকা দিয়ে ক্যাম্পাস খোলার কথা জানিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তবে এ ধরনের সিদ্ধান্তে একমত হতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। সব শিক্ষার্থীকে টিকা দিয়েই বিশ্ববিদ্যালয় খোলার পক্ষে কমিশন। আজ বৃস্পতিবার (২৭ মে) শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ইউজিসির এ সংক্রান্ত বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়।
শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়া ও বিশ্ববিদ্যালয় খোলার বিষয়ে এ সভার আয়োজন করা হয়। এতে টিকা দেয়া ও বিশ্ববিদ্যালয় খোলার সিদ্ধান্তে দুই পক্ষ একমত হতে পারেনি বলে জানা গেছে। বৈঠকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মাহবুব হোসেনসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অংশ নেন। এ ছাড়া ইউজিসির পক্ষে চেয়ারম্যান অধ্যাপক কাজী শহীদুল্লাহ উপস্থিত ছিলেন।
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন ইউজিসির সদস্য অধ্যাপক ড. দিল আফরোজা বেগম, ড. মুহাম্মদ আলমগীর, ড. মো. সাজ্জাদ হোসেন, ড. বিশ্বজিৎ চন্দ, ড. মো. আবু তাহের ও সচিব ড. ফেরদৌস জামান। সভা শেষে ইউজিসি সচিব বলেন, ‘প্রথমদিকে আবাসিক হলের শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়ার পর ক্যাম্পাস খোলার পক্ষে ছিল ইউজিসিও। তবে এখন সিদ্ধান্ত নিয়েছে সব শিক্ষার্থীকে টিকা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় খোলার প্রস্তাব দেওয়া হবে। এটি আমরা রোববার পাঠাবো স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে।’
ড. ফেরদৌস জামান বলেন, ‘ক্লাসে সব শিক্ষার্থীই আসবে। তাই হলের শিক্ষার্থীদেরই শুধু টিকা দিলেই হবে না। সবাইকেই টিকা দিতে হবে। তবে হলের শিক্ষার্থীদের অগ্রাধিকার দেওয়া যেতে পারে।’
বৈঠক সূত্র জানায়, ইউজিসির প্রস্তাব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় সাড়ে তিন লাখ টিকা দিয়ে ক্যাম্পাস খোলা হোক। এ ধরনের একটি প্রস্তাব আগামী রোববার (৩০ মে) স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে দেবে ইউজিসি। তবে ইউজিসির প্রস্তাবে রাজি নয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তারা আবাসিক হলের এক লাখ ১০ হাজার শিক্ষার্থীকে টিকা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেয়ার পক্ষে। মন্ত্রণালয় পৃথক সিদ্ধান্তের প্রস্তাব শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে দেবে। এক লাখ ১০ হাজার শিক্ষার্থীকে টিকা দেওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়ার বিষয় সরকারি সিদ্ধান্ত বলেও ইউজিসির সংশ্লিষ্টদের জানিয়ে দেওয়া হয় সভায়।
এ প্রসঙ্গে ইউজিসির চেয়ারম্যান ড. কাজী শহিদুল্লাহ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা ক্লাস করবে, একসঙ্গে চলাফেরা করবে। আবাসিক-অনাবাসিক আলাদাভাবে ক্লাস করতে বা চলতে পারবে না। এ জন্য সব শিক্ষার্থীকে টিকা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় খোলার পক্ষে। কোনো শিক্ষার্থীকেই আমরা ঝুঁকির মধ্যে ফেলতে চাই না। এজন্য আমাদের সুপারিশ আমরা পাঠাবো। শিক্ষা মন্ত্রণালয়েও এ প্রস্তাব তুলে ধরেছি।’
শিক্ষার্থীদের দু’ডোজ টিকা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় খোলার পরিকল্পনা
জানতে চাইলে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব এ কে এম আফতাব হোসেন প্রামাণিক গণমাধ্যমকে বলেন, ‘ইউজিসি তাদের প্রস্তাব বৈঠকে জানিয়েছে। তবে আবাসিক শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়ার বিষয়টি সরকারি সিদ্ধান্ত। আবাসিক হলের এক লাখ ১০ হাজার শিক্ষার্থীকে টিকা দিয়ে ক্যাম্পাস খোলা হবে। শিক্ষামন্ত্রীকে বিষয়টি অবগত করা হবে। তিনি উচ্চপর্যায়ে কথা বলে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।’