২৬ মে ২০২১, ০৮:৫১

জুনে কি খুলছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান?

জুনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলবে কিনা জানা যাবে আজ  © ফাইল ফটো

করোনার কারণে গত বছরের মার্চে থেকে টানা বন্ধ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ফলে চার কোটি শিক্ষার্থীর শিক্ষা কার্যক্রম থমকে গেছে। বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও বেকায়দায়। এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা নিয়ে তৈরি হয়েছে চরম অনিশ্চয়তা। চাকরিপ্রার্থীরাও রয়েছেন শঙ্কায়। এ পরিস্থিতিতে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ও হতাশ শিক্ষার্থীরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার দাবিতে আন্দোলন শুরু করেছেন। এখন সব মহলে প্রশ্ন, জুনে কী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলছে?

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার দাবিতে শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলনের মধ্যেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের চলমান ছুটি ও শিক্ষা সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলতে সংবাদ সম্মেলন ডেকেছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। বুধবার (২৬ মে) দুপুর ১২টায় এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এতে ছুটি বাড়বে কি-না, সে প্রশ্নের জবাব মিলবে। এ ছাড়া এসএসসি-এইচএসসিসহ নানা শিক্ষাসংক্রান্ত বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব মিলতে পারে। যদিও ছুটি আরও এক দফা বাড়তে পারে আগেই ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে।

সর্বশেষ ঘোষণা অনুযায়ী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি বাড়ানো হয় আগামী ২৯ মে পর্যন্ত। এখন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর দাবি করছে, বেশির ভাগ অভিভাবক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিপক্ষে। যদিও বেসরকারি সংস্থা পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টার (পিপিআরসি) এবং ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (বিআইজিডি) জরিপ বলছে, দেশের ৯৭ শতাংশ অভিভাবক তাদের সন্তানকে স্কুলে পাঠাতে চান। এছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার কারণে প্রাথমিকের ১৯ শতাংশ ও মাধ্যমিক স্তরের ২৫ শতাংশ শিক্ষার্থী শিখতে না পারার ঝুঁকিতে আছেন।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়ার দাবি আন্দোলনে রয়েছেন শিক্ষার্থীরা। গত সোমবার ও মঙ্গলবার সারাদেশে মানববন্ধন করেছেন তারা। অনলাইনের পরিবর্তে ক্লাসরুমে পরীক্ষা ও ক্লাস নেওয়ার দাবি তাদের। যদিও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ভ্যাকসিনের আওতায় এনে ক্লাসে ফেরানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।

এর আগে গত ফেব্রুয়ারিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী। তবে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় তা আর সম্ভব হয়নি। তবে স্বাস্থ্যবিধি ও গাইডলাইন মেনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার জন্য তখন থেকেই প্রস্তুতি রয়েছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা।

এদিকে করোনা সংক্রান্ত জাতীয় পরামর্শক কমিটির পরামর্শ মোতাবেক, করোনা সংক্রমণ ৫ শতাংশের নিচে থাকলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা যাবে। তবে সর্বশেষ প্রতিবেদনেও দেখা গেছে, করোনার সংক্রমণের হার এখন ১০ শতাংশের কাছাকাছি। এ পরিস্থিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা সম্ভব হবে কি-না তা নিয়ে রয়েছে অনিশ্চয়তা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, করোনা সংক্রমণের হার কমে আসায় অঞ্চলভিত্তিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে চিন্তাভাবনা করছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। কম সংক্রমণের জেলা ও উপজেলার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো এক্ষেত্রে প্রাধান্য দেওয়া হতে পারে। শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে কথা বলতে পারেন।

সূত্র আরো জানায়, সংবাদ সম্মেলনে চলতি বছরের এসএসসি-এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের সংক্ষিপ্ত সিলেবাস শেষে তিন মাস পর পরীক্ষা নেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হতে পারে। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতর এবং শিক্ষাবোর্ডের প্রস্তাবনা অনুযায়ী তাদের ৬০ দিন এবং ৮০ দিন ক্লাসে পড়িয়ে তারপর পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত বহাল রয়েছে। তবে পরীক্ষার সময় পিছিয়ে দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে।

কম করোনা সংক্রমিত এলাকায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার প্রস্তাব

এ ছাড়া জুনের মাঝামাঝি এই দুই স্তরের ক্লাস শুরুর ঘোষণা আসতে পারে। পাশাপাশি ২০২২ সালের এসএসসি ও এইচএসসির জন্য সংক্ষিপ্ত সিলেবাসের সার সংক্ষেপ শিক্ষামন্ত্রী জানাতে পারেন। চলতি বছর অটোপাস দেওয়া হবে না বলে আগেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেটির বিষয়েও কথা বলতে পারেন মন্ত্রী।

আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয়ক ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক নেহাল আহমেদ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘এবার এসএসসি-এইচএসসিতে অটোপাস দেওয়া হবে না। প্রয়োজনে আরও তিন মাস পরীক্ষা পেছাবে। করোনা পরিস্থিতিতে বিশ্বের কোনো দেশে পরীক্ষা হয়নি। আমরা পরীক্ষা নেওয়ার পক্ষে। সেজন্য পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি।’

অধ্যাপক নেহাল আহমেদ বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলবে কি না, শিক্ষামন্ত্রী বলতে পারবেন। স্থগিত পরীক্ষাগুলো নেওয়ার বিষয়ে মতামত দিয়েছি। মন্ত্রণালয় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।