শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার জন্য আন্দোলন, কী বলছে বোর্ড-মন্ত্রণালয়-বিশেষজ্ঞরা
করোনাভাইরাসের কারণে প্রায় ১৫ মাস ধরে বন্ধ দেশের সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে বন্ধ রয়েছে স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা-বিশ্ববিদ্যালয়। সর্বশেষ দফায় আগামী ২৯ মে পর্যন্ত এ ছুটি বৃদ্ধি করা হয়েছে। লকডাউন বৃদ্ধি পাওয়ায় এ ছুটি আরও বাড়তে পারে বলে ইতিমধ্যে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন শিক্ষার্থীরা। তারা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার দাবিতে আন্দোলন শুরু করেছেন।
অবিলম্বে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার দাবিতে সোমবার রাজধানীসহ সারাদেশে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষার্থীরা। রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ঢাকা কলেজ, ইডেন কলেজ, ঢাকা সিটি কলেজসহ ঢাকার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা সোমবার সকালে ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে মানববন্ধন অংশ নিয়েছেন। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে সভা ডেকেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
এদিকে শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলন ও দাবির বিষয়টি অবগত আছেন বলে জানিয়েছেন শিক্ষা বোর্ড ও মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, বিষয়টি তারা জেনেছেন। তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ বা খোলার বিষয়ে সব সিদ্ধান্ত করোনা মোকাবিলায় গঠিত পরামর্শক কমিটি ও আন্ত:মন্ত্রণালয়ের মতামতে করা হয়েছে। সে কারণে এ বিষয়ে সিদ্ধান্তও সেভাবে আসবে বলে জানা গেছে।
এ প্রসঙ্গে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয়ক ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক নেহাল আহমেদ গণমাধ্যমকে বলেছেন, করোনায় যে ক্ষতি হয়েছে তা পূরণ করা অনেক কঠিন। এটা যাতে দীর্ঘ না হয় সেজন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার চেষ্টা করা হচ্ছে। ক্লাস রুমে পড়িয়ে পরীক্ষা নেওয়ার জন্য কাজ চলছে বলে জানান তিনি।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার দাবির বিষয়টি মন্ত্রণালয় অবগত: শিক্ষা সচিব
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, দীর্ঘ সময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার কারণে শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিচ্ছে। শিক্ষার্থীদের বিকল্প উপায়ে পাঠদান করতে অভিভাবকদের ব্যয় বেড়েছে। তবে শিক্ষার ঘাটতি দূর হচ্ছে না। তাই পুনরায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া প্রয়োজন। এখন তা করতে না পারলে শিক্ষার সুদূরপ্রসারী ক্ষতি ভবিষ্যতেও পূরণ সম্ভব হবে না বলে মনে করেন তিনি।
জানতে চাইলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন গণমাধ্যমকে বলেছেন, শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন মহলের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার ব্যাপারে দাবির বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় অবগত আছে। এ পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ বা খোলার বিষয়ে সব সিদ্ধান্ত করোনা মোকাবিলায় গঠিত পরামর্শক কমিটি ও আন্ত:মন্ত্রণালয়ের মতামতে করা হয়েছে। এ মুর্হূতে করণীয় কী, তা দ্রুতই জানিয়ে দেওয়া হবে। শিক্ষামন্ত্রী এ ব্যাপারে ব্রিফিং করবেন বলেও জানান তিনি।
অপরদিকে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মধ্যেই সোমবার (২৪ মে) রাতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা আবুল খায়ের একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি গণমাধ্যমে পাঠিয়েছেন। তাতে জানানো হয়েছে, করোনা সংক্রমণের কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের চলমান ছুটি ও শিক্ষা সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলতে সংবাদ সম্মেলন ডেকেছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
বুধবার (২৬ মে) দুপুর ১২টায় এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এতে ছুটি আরও এক দফা বাড়ানোর ঘোষণা দেওয়া হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।