করোনায় ছেলের মৃত্যু, ১০ ঘণ্টা পর মারা গেলেন মা
করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে ছেলের মৃত্যুর ১০ ঘণ্টা পর হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেলেন মা। একই দিনে মা ও ছেলের মৃত্যুতে আত্মীয়স্বজন, পাড়া–প্রতিবেশীসহ পরিচিত মহলে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। ঘটনাটি ঘটেছে মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার পাঠানটুলা গ্রামে।
গতকাল রবিবার (২৩ মে) সকাল সাড়ে নয়টার দিকে সিলেটের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান রাজনগর উপজেলা সদরের ব্যবসায়ী সোহেল বখস (৩২)। তিনি করোনায় সংক্রমিত হয়ে চিকিৎসাধীন ছিলেন। তিনি রাজনগর উপজেলার পাঠানটুলা গ্রামের মোস্তফা বখসের ছেলে। ছেলে মৃত্যুর ১০ ঘণ্টা পর রাত সোয়া ৮টার দিকে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান মা দুলবাহার বখস (৬২)।
আত্মীয়স্বজন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত সপ্তাহে সোহেল বখস, তার মা, বাবা, ভাই ও ভাবির করোনা শনাক্ত হয়। এরপর ১৬ মে তাঁরা সিলেটের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নেন। তিন দিন আগে সবার করোনা পরীক্ষার ফল নেগেটিভ আসে। তবে করোনা–পরবর্তী কিছুটা উপসর্গ ছিল। কিন্তু হঠাৎ সোহেল বখসের শারীরিক অবস্থা খারাপ হতে থাকে। তাকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) স্থানান্তর করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল সকালে তিনি মারা যান।
সোহেল বখসের প্রতিবেশী রিভান বখস বলেন, সোহেল বখসের বাবা, ভাই ও ভাবি করোনামুক্ত হলেও তাদের শারীরিক অবস্থা তেমন ভালো নয়। ছেলের লাশ দাফন করতে না করতেই মা মারা গেছেন। এমন ঘটনায় পরিবারে মাতম চলছে।
সোহেল বখসের মামাতো বোন রেহনোমা রুবাইয়াত আজ সোমবার প্রথম আলোকে বলেন, ‘গতকাল বিকেল পাঁচটার দিকে হাসপাতাল থেকে ভাইয়ের লাশ আসে। ফুফু সারা দিনই অনেকটা অচেতন ছিলেন। সন্ধ্যার দিকে কিছুটা স্বাভাবিক হওয়ার পর আর ছেলে হারানোর শোক নিতে পারেননি।’
এদিকে মৌলভীবাজার জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, মৌলভীবাজারে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ১৬ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ পর্যন্ত জেলায় মোট করোনা শনাক্ত হয়েছে ২ হাজার ৪২৬ জনের। সুস্থ হয়েছেন ২ হাজার ২৭৯ জন। মারা গেছেন ২৯ জন।
জেলা সিভিল সার্জন চিকিৎসক চৌধুরী জালাল উদ্দিন মুর্শেদ প্রথম আলোকে বলেন, জেলায় করোনার সংক্রমণ কিছুটা কমতির দিকে ছিল। কিন্তু এখন আবার বাড়ছে। সংক্রমণ প্রতিরোধে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মানায় আরও সচেতন হওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।