শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার দাবিতে চট্টগ্রামে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন

দ্রুত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হোক
দ্রুত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হোক  © টিডিসি ফটো

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার দাবিতে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন সাধারণ শিক্ষারথীরা। আজ সোমবার (২৪ মে) দুপুরে আয়োজিত এ কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীদের একটাই দাবি- দ্রুত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হোক।

কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন, দেশের সব কিছুই সচল রয়েছে কেবল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অচল। রাস্তা-ঘাট, বিনোদনকেন্দ্র, শপিংমল সব কিছু খোলা থাকতে পারে কেবল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যত সমস্যা। করোনার সাথে যুদ্ধ করেই আমাদের বাঁচতে হবে। এর জন্য থমকে গেলে চলবে না। আমরা সেটাই চাই। ডিপ্রেশনে পড়ে আত্মহত্যা করার বদৌলতে করোনার সাথে যুদ্ধ কি অধিক উপযোগী নয়?

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শিক্ষার্থী নাসরিন আক্তার বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় আমাদের বাড়িতে থাকতে হচ্ছে। অসমাপ্ত শিক্ষাজীবন নিয়ে চাকরির কোন সুযোগ নেই। পরিবার থেকে প্রতিনিয়ত চাপের মুখে পড়তে হচ্ছে৷ মুখোমুখি হতে হচ্ছে সমাজের বিভিন্ন মানুষের বুলির। আর এসব আমাদের অপদার্থ হিসেবে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছে চারপাশের মানুষের কাছে। যা একজন শিক্ষার্থীর জন্য খুবই মর্মান্তিক যন্ত্রণা।

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) শিক্ষার্থী ফারদিন বলেন, ২০২১ সালের জানুয়ারিতে আমার অনার্স শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু আমরা এখন কোথায়! মন্ত্রণালয় থেকে বলা হচ্ছে ভ্যাকসিন দিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা হবে। কিন্তু কোথায় সেই ভ্যাকসিন? আমরা চাই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলেই ভ্যাকসিন দেয়া হোক৷ ভ্যাকসিন শিক্ষার্থীদের জন্য মুলা ঝুলিয়ে রাখার মতো। এর দোহাই দিয়ে বারবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ দেয়া আমরা কোনভাবেই মেনে নেবো না।

বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী প্রান্ত বড়ুয়া বলেন, আমরা উচ্চ মাধ্যমিক পাস করে ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছি। কিন্তু ভর্তি পরীক্ষার সময়সূচী পেছানোর ফলে মানসিক চাপ ও পরীক্ষার প্রস্তুতিতে ব্যাঘাত সৃষ্টি করছে।

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাইফুর রুদ্র বলেন, ২০১৯ সাল থেকে বন্ধ আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এমন পরিস্থিতিতে আমাদের শিক্ষাজীবন প্রায় বিপন্নের পথে। এই বন্ধ আমাদের চরম দুর্ভোগের সৃষ্টি করছে। শিক্ষার্থীরা হতাশাগ্রস্ত হয়ে ঝুঁকিপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। অনেকে পড়াশোনা ছেড়ে দিয়ে প্রবাসে বা দিনমজুরের কাজে যেতে বাধ্য হচ্ছে। কী বেহাল দশা আমাদের শিক্ষার! আমরা চাই অবিলম্বে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া হোক।

আগ্রবাবাদ মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী ফায়রোজা বলেন, আজকে অনলাইনে ক্লাস নেয়া হচ্ছে, পরীক্ষা নেয়ার কথা চলছে৷ কিন্তু দেশের অধিকাংশ শিক্ষার্থী গ্রামে থাকে। যেখানে ইন্টারনেট সংযোগ পাওয়ায় বড় দায়, শিক্ষার্থীরা ক্লাস-পরীক্ষা দিবে কীভাবে! আজকে অসংখ্য শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন ধ্বংসের পথে। এভাবে চলতে পারে না।

চবি শিক্ষার্থী জহিরুল ইসলামের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন চবি শিক্ষার্থী ওসমান, সুধী কুমার তঞ্চঙ্গা, জিলানী, দোসর রহমান, দ্রুব ভাট্টাচার্য ও সায়মন। চট্টগ্রাম সিটি কলেজের শিক্ষার্থী শাহেদুল ইসলাম, ফারুক হোসেন, প্রান্ত প্রমুখ। এতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন।


সর্বশেষ সংবাদ