ঈদে গণপরিবহন বন্ধ রাখার পরিকল্পনা সরকারের

করোনা ঠেকাতে ঈদে বাস চলাচল বন্ধ রাখার পরিকল্পনা করছে সরকার
করোনা ঠেকাতে ঈদে বাস চলাচল বন্ধ রাখার পরিকল্পনা করছে সরকার  © ফাইল ফটো

করোনার বিস্তার রোধে ঈদুল ফিতরের সময় আন্তঃজেলা গণপরিবহন বন্ধ রাখার পরিকল্পনা রয়েছে সরকার। এ সময়ে এক জেলা থেকে আরেক জেলায় কোনো বাস চলাচল করতে পারবে না। চলমান লকডাউন পরিস্থিতি নিয়ে পর্যালোচনা সভায় এ বিষয়টি আলোচনা হয়েছে। চলমান লকডাউনের মেয়াদ শেষ হবে আগামী ৫ মে।

জানা গেছে, ঈদের সময় যাতে শ্রমিকদের ছুটি না দেওয়া হয়, পোশাক কারখানার মালিকদের কাছে সে প্রস্তাব পাঠানো হবে। বিপণিবিতানগুলোয় স্বাস্থ্যবিধি মানা না হলে তা বন্ধ করে দেওয়া হবে। এ ক্ষেত্রে জরিমানাসহ কঠোর পদক্ষেপের কথাও চিন্তাভাবনা করছে সরকার।

‘চলমান লকডাউন পরিস্থিতি পর্যালোচনা ও ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা নির্ধারণ’ বিষয়ে রোববার (২ মে) এ ভার্চ্যুয়াল সভা অনুষ্ঠিত হয়। উপস্থিত ছিলেন মেয়র, সচিব, গোয়েন্দা সংস্থার প্রধানসহ সংশ্লিষ্টরা। সভাপতিত্ব করেন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক।

সভায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সংক্রমণের বড় জায়গা বিপণিবিতান। দোকানপাটে মাস্ক কেউ না পরে তাহলে তা বন্ধ করাই ভালো। আন্তঃজেলা চলাচল, কিংবা এক শহর থেকে আরেক শহরে চলাচল করা যাবে না। সে জন্য গণপরিবহন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। প্রয়োজনে এ খাতকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। সামাজিক বা রাজনৈতিক অনুষ্ঠান বন্ধ থাকবে। ঈদে যে যেখানে আছি, সবাইকে সেখানেই থাকতে হবে।’

এ প্রসঙ্গে যোগাযোগসচিব মো. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘ঈদের ছুটির সময় আন্তঃজেলা গণপরিবহন বন্ধ রাখতে প্রস্তাব এসেছে। এ ক্ষেত্রে পরিবহন শ্রমিকদের প্রণোদনা দেওয়ার প্রস্তাব করেছি। কারণ তারা ঈদে গাড়ি চালিয়ে আয় করতেন।’

সূত্র জানায়, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ বৈঠকে বলেছেন, পরিবহন বন্ধ করতে হলে সবকিছু বন্ধ রাখতে হবে। নতুন করে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে হলে তা ঈদের পরে নেওয়ার পক্ষে মতামত দেন তিনি। 

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস বলেছেন, বাসগুলো ঢাকার ভেতরে যাতে না ঢোকে। ঢাকার বাইরে টার্মিনালে থাকে। এসময় লঞ্চ ও রেলওয়ে বন্ধ রাখার ওপরও জোর দেন। উত্তর সিটির মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, বিমানবন্দর স্টেশন, মহাখালী ও গাবতলী বাসস্ট্যান্ডে জনসমাগম হয়। বিপণিবিতানগুলোর ভয়াবহতার কথাও তুলে ধরেন তিনি।

গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র জাহাঙ্গীর আলম বলেছেন, ২২ থেকে ২৪ লাখ শ্রমিক গাজীপুর সিটিতে কাজ করেন। ঈদের দু-তিন আগে ২৪ ঘণ্টা তাঁরা যাওয়া-আসা করেন। ফলে করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ হতে পারে। তারা ছুটিতে যেন আসা-যাওয়া না করেন, সেজন্য ব্যবস্থা নিতে হবে।

এছাড়া নারায়ণগঞ্জ, চট্টগ্রাম, খুলনা, ময়মনসিংহের মেয়ররা বলেন, বিপণিবিতান, কাঁচাবাজারে লকডাউন আছে বলে মনে হয় না। বিপণিবিতানের চলমান অবস্থা অব্যাহত থাকলে অবস্থা হবে ভারতের মতো। বিয়েসহ সামাজিক অনুষ্ঠান, জন্মদিন, ধর্মীয় সভা-সমাবেশ না করার বিষয়েও মত তাদের।

এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস বলেছেন, ঈদে চলাচল বন্ধে মালিকদের পদক্ষেপ নিতে হবে। কেউ ছুটি পাবে না বলে জানিয়ে দিতে হবে। তা না হলে আগের ১৮ দফা মেনে সামনে এগোতে পারেন বলেও জানান তিনি।


সর্বশেষ সংবাদ