‘থানায় নিয়ে যাইতে চাইছিল, আমি আইয়্যা পড়ছি’

মো. মারুফ
মো. মারুফ  © সংগৃহীত

একটি অনলাইন নিউজপোর্টালের একজন সাংবাদিক লাইভ করছিলেন। লাইভের শেষমুহূর্তে এক পথশিশু সেখানে চলে আসে। লাইভেই তাকে বলতে শোনা যায়, ‘যে লকডাউন দিয়েছে, সামনে ঈদ, মানুষ খাবে কী? লকডাউন দিয়েছে এটা ভুয়া।’ এ ঘটনার পর ওই পথশিশুকে মারধর করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ওই ভিডিও ও শিশুটিকে মারধরের ছবি ছড়িয়ে পড়েছে।

ছড়িয়ে পড়া ছবিতে দেখা যায়, মারধরের ফলে শিশুটির চোখ-মুখ ফুলে গেছে। শিশুটির নাম নাম মো. মারুফ। তার বাবা বিক্রমপুরের মাওয়ায় থাকেন। তার মা নেই। শিশুটি জানান, ‘‘আমি খালি কইছি যে, ভুয়া লকডাউন। সামনে ঈদ, মানুষ খাবে কি? এটার জন্য আমারে মারছে।’’

সে জানায়, ‘‘মারধরের পর আমারে থানায় নিয়া যাইতে চাইছিল, আমি আইয়্যা পড়ছি। আমারে (সামনের দিকে দেখিয়ে) রাইত ১০টায় পুলিশে এই কোর্টে মারছে। মাননীয় মন্ত্রী যে লকডাউন দিয়েছে, সামনে ঈদ মানুষ খাবে কি? অর্ধেক মানুষ মারা গেছে, অর্ধেক মানুষ বাঁইচা আছে। আর অর্ধেক মানুষ মারা যাবে। লকডাউন মানি না, এটা ভুয়া লকডাউন। ধন্যবাদ, গুডবাই। জয় বাঙলা, জয় বঙ্গবন্ধু।’’

এদিকে, মারধরের পর শিশুটির চোখ-মুখ ফোলা কয়েকটি ছবিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এসব ছবিগুলো শেয়ার করে অনেক ব্যবহারকারী মারধরের সমালোচনা করেছেন। মিনহাজুল ইসলাম ভূঁইয়া নামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এক ছাত্রনেতা লিখেছেন, ‘ক্ষমতার দম্ভ তাদের এতই অন্ধ করে ফেলছে যে, এতটুকু একটা পথশিশু বাচ্চার সমালোচনা সহ্য করার মানসিক শক্তিও তারা হারিয়ে ফেলেছে। এই বাচ্চা ছেলেটার গায়ে হাত তুলতে তাদের বিবেক এতটুকু কাঁপলো না!’

তিনি লিখেন, ‘সে তো অযৌক্তিক কিছু বলেনি। অন্য অনেকেই যা বলতে চেয়েও বলেনি, সে স্বাচ্ছন্দ্যে তা বলে দিয়েছে। এটা কি খুব বেশী অপরাধের কাজ হয়ে গেল ? দুঃখজনক। তবে সবকিছুরই যে একটা শেষ আছে,এটা মনে হয় তারা ভুলে গেছে। সময় নিশ্চয়ই এর উপযুক্ত জবাব দেবে।’


সর্বশেষ সংবাদ