কমছে করোনা শনাক্ত: নেপথ্যে লকডাউন নাকি কম টেস্ট
করোনা ভাইরাসের বিস্তার রোধে গত ১৪ এপ্রিল থেকে দেশে আট দিনের কঠোর লকডাউন শুরু হয়েছে। লকডাউনের মধ্যে প্রতিদিনই করোনায় মৃতের সংখ্যা বাড়ছে। তবে আক্রান্তের সংখ্যা কমছে। নমুনা পরীক্ষা কমে যাওয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা কমছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের গত সাতদিনের তথ্য বিশ্লেষণ করে এমন চিত্র পাওয়া গেছে।
এদিকে বেশি বেশি নমুনা পরীক্ষার উপর জোর দিয়েছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, অধিক নমুনা পরীক্ষার মাধ্যমে রোগীদের শনাক্ত করে আইসোলেশন নিশ্চিত করতে হবে। এতে করে ওই রোগীর সংস্পর্শে এসে নতুন করে কেউ আক্রান্ত হবে না। তবে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের এমন ভাবনার উল্টো পথে রয়েছে বাংলাদেশ। কেননা দেশে প্রতিনিয়তই নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা কমে যাচ্ছে। সেই সাথে কমছে আক্রান্তের সংখ্যাও।
তথ্যমতে, গত ১১ এপ্রিল দেশে ২৪ ঘণ্টায় ২৯ হাজার ৩৭৬টি নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত হয় পাঁচ হাজার ৮১৯ জন। ১২ এপ্রিল নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা বাড়ার সাথে সাথে বেড়ে যায় শনাক্তের সংখ্যা। এদিন ৩৪ হাজার ৯৬৮ টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। আর তাতে শনাক্ত হন ৭ হাজার ২০১।
১৩ এপ্রিল থেকে নমুনা পরীক্ষা কমতে থাকে। সেই সাথে কমতে থাকে আক্রান্তের সংখ্যাও। ১৩ এপ্রিল নমুনা পরীক্ষা করা হয় ৩২ হাজার ৯৫৫টি। নমুনা পরীক্ষায় নতুন ছয় হাজার ২৮ জন শনাক্ত হয়। লকডাউনের শুরুর দিন নমুনা পরীক্ষা ৩০ হাজারের নিচে নামে। এদিন ২৪ হাজার ৮২৫টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। নমুনা পরীক্ষায় পাঁচ হাজার ১৮৫ জন নতুন রোগী শনাক্ত হন।
এর পর গত ১৫ এপ্রিল মাত্র ১৯ হাজার ৯৫৯টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। তাদের মধ্যে শনাক্ত হন ৪ হাজার ১৯২ জন। ১৬ এপ্রিল নমুনা পরীক্ষা করা হয় ১৮ হাজার ৯০৬টি। এদের মধ্যে শনাক্ত হন ৪ হাজার ৪১৭ জন। সবশেষ গত ২৪ ঘণ্টায় মাত্র ১৬ হাজার ১৮৫টি নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত হন ৩ হাজার ৪৭৩ জন।
এদিকে করোনার তথ্য দেয়া আন্তর্জাতিক ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডমিটারের তথ্য অনুযায়ী, নমুনা পরীক্ষার দিক দিয়ে বিশ্বে ৫০তম অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। দেশে প্রতি ১০ লাখ মানুষের বিপরীতে নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে মাত্র ৩০ হাজার ৩৫৪ জনের।
প্রসঙ্গত, দেশে গত ৮ মার্চ প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়। এখন পর্যন্ত দেশে মোট শনাক্ত হয়েছেন ৭ লাখ ১৫ হাজার ২৫২ জন। এখন পর্যন্ত মারা গেছেন ১০ হাজার ২৮৩। আর দেশে বর্তমানে মোট সুস্থ রোগীর সংখ্যা ৬ লাখ ৮ হাজার ৮১৫ জন।