সরকারের সিদ্ধান্ত বহাল আছে, কওমি মাদ্রাসা প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
করোনাভাইরাসের কারণে দেওয়া লকডাউনেও কওমি মাদ্রাসা বন্ধ করা যাবে না বলে হুশিয়ারি দিয়েছেন হেফাজতে ইসলামের নেতারা। তবে তাতে পাত্তা দিচ্ছে না সরকার। সরকারের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে কাজ করছেন জেলা প্রশাসকেরা।
এ প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, ‘সরকারের সিদ্ধান্ত বহাল আছে। এর পরিবর্তন হবে না।’ এদিকে সরকারের সিদ্ধান্ত মোতাবেক জেলা পর্যায়ে যেসব মাদ্রাসায় এতিমখানা আছে সেগুলো ছাড়া বাকি ছাত্রদের এরই মধ্যে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে।
গত রোববার হাটহাজারীতে হেফাজতের বৈঠকের পর সংগঠনটির আমির মাওলানা জুনায়েদ বাবুনগরী বলেন, ‘লকডাউনে মসজিদ মাদ্রাসা বন্ধ করা যাবে না। নুরানী, হেফজখানা, কওমি দ্বীনি মাদ্রাসা বন্ধ রাখা যাবে না। যেখানে কোরআন, হাদিস পাঠ করা হয়, যেখানে হেফজখানায় ছাত্ররা কোরান পাঠ করে সেখানে করোনা আসবে না।’
করোনার সময় সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও মাঝখানে কওমি মাদ্রাসা খুলে দেয়া হয়। কিন্তু গত ৬ এপ্রিল কওমিসহ সব ধরনের মাদ্রাসা পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত বন্ধ রাখতে বলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এতিমখানা এ আদেশের বাইরে রাখা হয়। যদিও আলিয়া মাদ্রাসা আগে থেকেই বন্ধ রয়েছে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক কায়সার আহমেদ বলেন, ‘কওমি মাদ্রাসা আমাদের নিয়ন্ত্রণে নাই। আলিয়া মাদ্রাসা আগে থেকেই বন্ধ আছে। তারপরও নতুন করে তাদের সরকারি আদেশের কথা জানিয়ে দিয়েছি।’
দেশে সবচেয়ে বেশি কওমি মাদ্রাসা, চট্টগ্রাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া এবং নারায়নগঞ্জে। হাটহাজারী মাদ্রাসা হলো কওমি মাদ্রাসার কেন্দ্র। এ মাদ্রাসায় ১৪ হাজারের বেশি ছাত্র আছে।
চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান জাানান, ‘শুধু এতিমখানার রেজিষ্টার্ড ছাত্র ছাড়া সবাইকে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের যানবাহনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। যার সেখানে বাড়ি সেখানে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। হাটহাজারী মাদ্রাসায় ২২০ জন এতিম আছেন।’
তিনি বলেন, তাদের সেবার জন্য আরো ৬০ জনের মতো লোক আছেন। এখন শুধু তারাই মাদ্রাসায় আছেন। সোমবার সকালে ছাত্রদের সর্বশেষ দলটিকে গ্রামের বাড়িকে পাঠানো হয়। তিনি জানান, তারা যানবাহনের অজুহাত দিয়েছিলো। পরিবহনের ব্যবস্থা করায় তারা আর কোনো আপত্তি করেনি।
হেফাজতে ইসলামের প্রচার সম্পাদক মাওলানা জাকারিয়া নোমান ফয়েজী জানান, কওমি মাদ্রাসার এতিমখানা এবং হেফজখানা খোলা আছে। আর সব বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এসময় তিনি দাবি করেন, মাদ্রাসার কেউ করোনা আক্রান্ত হননি। তিনি বলেনম ‘আমরা কোরআন, হাদিস পড়ার সাথে স্বাস্থ্যবিধিও মানি। ফলে মাদ্রাসায় করোনা হয় না।’ সূত্র: ডয়েচে ভেলে।