সিলেটের থানা-ফাঁড়িতে লাইট মেশিনগান পোস্ট

  © ফাইল ছবি

সিলেটের ১৭টি থানাসহ পুলিশ ফাঁড়ি ও পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রগুলোতে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। নগরের ছয়টি থানা, চারটি ফাঁড়িসহ প্রতিটি পুলিশ স্থাপনায় বাঙ্কার তৈরি করে সেখানে বসানো হয়েছে অত্যাধুনিক অটোমেটিক লাইট মেশিনগান (এলএমজি) পোস্ট।

পাশাপাশি জেলার ১১টি থানায় এই স্বয়ংক্রিয় অস্ত্রটি বসানোর কাজ চলছে। একই সঙ্গে, ঝুঁকি বিবেচনায় প্রতিটি থানায় অতিরিক্ত ৩০ থেকে ৫০ জন পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।

চরমান পরিস্থিতিতে যে কোনো ধরনের অনাকাঙিক্ষত ঘটনা এড়াতে পুলিশ সদর দফতরের নির্দেশনায় এমন ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলে জাগো নিউজকে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন থানা, উপজেলা পরিষদসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড লক্ষ্য করা গেছে। সরকারি-বেসরকারি স্থাপনায় হামলা চালানো হয়েছে। ভাঙচুর ও আগুন দিয়ে রাষ্ট্রীয় ও ব্যক্তিমালিকানাধীন সম্পদ নষ্ট করা হয়েছে। এই অবস্থায় সিলেট মহানগর পুলিশের (এসএমপি) আওতাধীন ছয় থানা, সবকটি ফাঁড়ি ও গুরুত্বপূর্ণ সকল স্থাপনায় বিশেষ নিরাপত্তা গ্রহণ করা হয়েছে। প্রতিটি স্থাপনায় বালু ও মাটি দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে বাঙ্কার। সেই বাঙ্কারে এলএমজি পোস্ট বসিয়ে পুলিশ সদস্যরা নিরাপত্তার দায়িত্বও পালন করছেন।

সিলেট কোতোয়ালি মডেল থানায় গিয়ে দেখা যায়, থানা চত্বরে বালুভর্তি বস্তা দিয়ে বাঙ্কার তৈরি করা হয়েছে। সেখানে দায়িত্বরত এক পুলিশ সদস্য মাথায় হেমলেট পরে এলএমজি তাক করে বসে আছেন। অতিরিক্ত সদস্যরা থানায় মোতায়েন রয়েছে। ঝুঁকি বিবেচনা করে কিছু থানার ছাদে ও সামনের ফাঁকা স্থানে এ ধরনের পোস্ট দেখা যায়।

সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (ডিবি ও গণমাধ্যম) বিএম আশরাফ উল্যাহ তাহের জানান, এসএমপির সব থানা, ফাঁড়ি ও স্থাপনায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। অনাকাঙিক্ষত পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রতিটি স্থাপনার সামনে বালুর বস্তা দিয়ে বাংঙ্কার তৈরি করে এলএমজি পোস্ট বসানো হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘বুধবার রাত থেকে এই পোস্টগুলো বসানোর কাজ শুরু হয়। ইতোমধ্যে সব স্থাপনায় এলএমজি পোস্ট বসানোর কাজ শেষ হয়েছে।’

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এটি একটি স্বয়ংক্রিয় (অটোমেটিক) অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র। একটি এলএমজির ড্রাম ম্যাগজিনে ১৫০ রাউন্ড গুলি রয়েছে। এটি থেকে একসঙ্গে ১৫০ রাউন্ড গুলি ছোড়া যায়। অস্ত্রগুলো পরিচালনার জন্য দক্ষ পুলিশ সদস্যদেরও পদায়ন করা হয়েছে।’

নগর গোয়েন্দা পুলিশের পদস্ত এই কর্মকর্তা বলেন, ‘জনগণের জানমাল রক্ষা ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পুলিশ সদর দফতর থেকে সারাদেশে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়ার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।’

সিলেট জেলার ১১টি থানাতেও এলএমজি পোস্ট বসানোর কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর দফতর ও গণমাধ্যম) মো. লুৎফর রহমান।

তিনি বলেন, ‘পুলিশ সদর দফতরের নির্দেশনায় জেলার সবগুলো থানায় এলএমজি ও গুলি সরবরাহ করা হয়েছে। পাশাপাশি এগুলো চালনার জন্য একজন দক্ষ পুলিশ সদস্য ও একজন করে তার সহকারীকেও পদায়ন করা হয়েছে। বাঙ্কার তৈরি করে মেশিনগানগুলো আজকালের মধ্যে স্থাপন করার কাজ শেষ হবে বলে আশা করছি।’


সর্বশেষ সংবাদ