হেফাজতের পদ ছাড়ছেন নায়েবে আমির আবদুল আউয়াল
হেফাজতে ইসলামের পদ ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির আবদুল আউয়াল। সোমবার (২৯ মার্চ) রাতে নারায়ণগঞ্জের ডিআইটি বাণিজ্যিক এলাকায় রেলওয়ে জামে মসজিদে শবে বরাতের বয়ানে মুসল্লিদের উদ্দেশে তিনি বলেন, হেফাজতের সঙ্গে আর থাকবেন না।
হেফাজতের নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির আমির আবদুল আউয়াল ওই মসজিদের খতিব। তাঁর বয়ানের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে তাঁর এ সিদ্ধান্তের বিষয়ে হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় কোনো নেতার প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
এ প্রসঙ্গে আবদুল আউয়ালের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে খাদেম মাহাদী হাসান তা রিসিভি করেন। তিনি একটি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘তিনি (আবদুল আউয়াল) ব্যস্ত আছেন, কথা বলতে পারবেন না।’ এসময় সরে দাঁড়ানোর ঘোষণার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘চাপ নেই। নিজে থেকে তিনি তাঁর পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন।’
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের সময় বিক্ষোভে পুলিশি হামলার প্রতিবাদে গত ২৭ মার্চ হরতাল ডাকে হেফাজতে ইসলাম। কর্মসূচিতে ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়কে সহিংসতা হয়। হরতালকারীরা কয়েকটি গাড়ি পুড়িয়ে দেয়, সংঘর্ষে অনেকে আহতও হন।
সহিংসতায় ক্ষোভ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘হরতালের দিন আমাকে মসজিদের ভেতরে আটকানো হয়েছে। তাঁরা (র্যাব–পুলিশ) আমাকে স্পষ্ট করে জানিয়েছে, সরাসরি অ্যাকশনে যাওয়ার অর্ডার রয়েছে। আমাদের তো অস্ত্র নেই, আমরা কি তাদের সঙ্গে পারি? পরে খবরে শুনেছি, শিমরাইলে ১৭টি গাড়ি পোড়ানো হয়েছে। কারা পুড়িয়েছে তা ভিডিওতে দেখা যায়, কিছু সন্ত্রাসী পুড়িয়েছে, আমাদের ছাত্ররা কেউ নেই। এখন তাঁরা (পুলিশ) বলতেছে, আপনি যদি আমাদের কথা না শুনতেন, সবগুলো মামলা আপনার নামে হইত।’
আবদুল আউয়াল বলেন, ‘তাঁরাও (পুলিশ) আমাদের বুঝতেছে না, আমাদের অতি উৎসাহী লোকেরাও বুঝতে চাইছে না। তাঁরা বলতেছে, হুজুর তাদের কমান্ড ভেঙে বের হয়ে গেল না কেন? আমি হেফাজতের সাথে থাকব না, মসজিদে থাকব। তোমরা যারা অতি উৎসাহী আছ, তোমরা করো। তোমাদের সাথে থাকব না। আমার বার্ধক্য বয়স, অসুস্থ দাঁড়াইতে পারি না, হাঁটতে পারি না। তাই হেফাজতের নেতৃত্ব দিব না, কোনো আন্দোলনেও যাব না।’
তিনি বলেন, ‘হেফাজতের আমির থাকব না, মুসলমান হিসেবে সাধারণ কর্মী হিসেবে থাকব। আমার জিম্মাদারি ছেড়ে দিলাম। হেফাজত ইসলামের নেতৃত্বে আর থাকব না। আন্দোলনের নেতৃত্ব দিব না। আমার পক্ষ থেকে কোনো ঘোষণা আসবে না। অব্যাহতি দিয়ে দিলাম।’