হেফাজত ও পুলিশের সংঘর্ষ: ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯
হেফাজতে ইসলামের ডাক দেয়া হরতালে আজকেও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হরতালকারীদের সাথে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটে। আজকের সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন তিনজন। এ দিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯ জনে।
গতকাল শনিবার (২৭ মার্চ) বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার বুধল ইউনিয়নের নন্দনপুর বাজার এলাকায় পুলিশ ও বিজিবি সদস্যদের সাথে হেফাজত নেতাকর্মী ও স্থানীয় কাসিন্দাদের সংঘর্ষ হয়। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে ছয়জন মারা যান।
এদিকে রবিবার (২৮ মার্চ) দু’জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ সকাল থেকেই সরাইলের সড়ক-মহাসড়ক হরতাল সমর্থক হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীরা নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেয়। এসময় তারা লাঠিসোঁটা নিয়ে অবস্থান করেন।
এদিন দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই দু’জনের মৃত্যু হয়। নিহতদের একজন জেলার সরাইল উপজেলার সৈয়দটুলা গ্রামের সফী আলীর ছেলে আলামিন (১৯) ও তাৎক্ষণিকভাবে অন্য একজনের নাম-পরিচয় কিছুই জানা যায়নি। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. শওকত হোসেন নিশ্চিত করেছেন বিষয়টি।
ডা. মো. শওকত হোসেন জানান, সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বেশ কয়েকজনকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। এর মধ্যে দুপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তবে তা কিসের আঘাত ময়নাতদন্ত না করলে বুঝা যাবে না।
এদিকে রোববার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত জেলা সদরের পশ্চিম মেড্ডা ও সরাইলের খাটিহাতায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে হরতাল সমর্থনকরীদের দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টা-ধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়। এতে বেশ কয়েকজন আহত হন। এ বিষয়ে পুলিশের দায়িত্বশীল কোনো কর্মকর্তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করলেও তাদের সাড়া পাওয়া যায়নি।
এছাড়া সকাল থেকে হরতালকে কেন্দ্র করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভা, জেলা পরিষদ, জেলা পরিষদ মার্কেট, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাব, ইন্ডাস্ট্রিয়াল স্কুল, জেলা ভূমি অফিস, আলাউদ্দিন সঙ্গীতাঙ্গন, জেলা সাব রেজিস্টার অফিসসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অফিস-প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর চালায় হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীরা। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রেসক্লাবে ভাঙচুরের সময় হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীদের বাধা দিতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছে প্রেসক্লাবের সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন জামি। মাথায় প্রচণ্ড আঘাত পেয়ে গুরুতর আহত হয়ে জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনি।