মোদিকে বরণ করতে প্রস্তুত রাজধানী
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে বরণ করতে প্রস্তুত রাজধানী। ইতোমধ্যে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও কিছু স্থাপনা সেজেছে বর্ণিল সাজে। ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে বসানো হয়েছে তোরণ। সড়কের খুঁটি, ভবন ও দেয়ালে মোদির ছবি সম্বলিত ব্যানার-ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে। সড়কের সৌন্দর্যবর্ধক ভাস্কর্যগুলোতেও ফুলের সঙ্গে শোভা পাচ্ছে মোদির ছবি। বড় বড় করে বিভিন্ন জায়গায় লেখা হয়েছে, ‘স্বাগতম ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি’।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠানে ভারতসহ বিভিন্ন রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। ইতোমধ্যে চারটি দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানরা বাংলাদেশে সফর করেছেন। করোনার কারণে অনেক দেশের শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত না হয়ে পাঠিয়েছেন ভিডিও বার্তা।
১৭ থেকে ২৬ মার্চ ১০ দিনের অনুষ্ঠানে এর আগে বিদেশি নেতারা অংশ নিয়েছেন। শেষ দিন (২৬ মার্চ) অংশ নেবেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। মহান মুক্তিযুদ্ধের সহযোগী দেশ, প্রতিবেশী, ব্যবসা-বাণিজ্য ও সাংস্কৃতিক আদান-প্রদানের কারণে দুই দেশের সম্পর্ক সুগভীর। ফলে দেশটির প্রধানমন্ত্রীর কদরও একটু বেশি। তাই তাকে বরণে সব প্রস্তুতি নিয়েছে বাংলাদেশ।
শুক্রবার সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করবেন নরেন্দ্র মোদি। তাকে অভ্যর্থনা জানাবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মোদিকে লাল গালিচা সংবর্ধনা এবং গার্ড অব অনার দেয়া হবে।
এদিন ভারতের প্রধানমন্ত্রী জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধে বীর শহীদদের শ্রদ্ধা জানাবেন। ধানমন্ডি-৩২ এ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতেও শ্রদ্ধা জানাবেন এবং বঙ্গবন্ধু স্মৃতি যাদুঘর পরিদর্শন করবেন। বিকালে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন।
২৭ মার্চ শনিবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধি ও কাশিয়ানী উপজেলার মতুয়া সম্প্রদায়ের তীর্থস্থান শ্রীধাম ওড়াকান্দি ঠাকুরবাড়ি পরিদর্শন করবেন। ইতোমধ্যে সেখানেও তাকে স্বাগত জানাতে সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। শ্রীধাম ওড়াকান্দিতে উলু ও শঙ্খধ্বনি দিয়ে এবং ডঙ্কা ও কাঁসা বাজিয়ে মতুয়া ধর্মাবলম্বীরা নরেন্দ্র মোদিকে বরণ করবেন বলে জানা গেছে।
একই দিন সাতক্ষীরায় হিন্দু মন্দিরও পরিদর্শন করবেন মোদি। এছাড়া বাংলাদেশ সফরে তিনি ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিরোধী রাজনৈতিক দল বিএনপিসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক করবেন বলে জানা গেছে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির এ সফরে বাংলাদেশের সঙ্গে অনেকগুলো চুক্তি সই হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এর মধ্যে বিনিয়োগ, বাণিজ্য এবং পারস্পরিক সহযোগিতা অন্যতম। এছাড়া তিস্তা চুক্তি নিয়ে ভারত দ্রুত একটি সিদ্ধান্তে আসবে বলেও জানা গেছে। এমনটাই আভাস দিয়েছেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা।
নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশে সফর উপলক্ষে দিল্লিতে এক সংবাদ সম্মেলনে শ্রিংলা বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রীর এ সফরটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সফরে ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি এবং দুই দেশের নাগরিকদের যোগাযোগ বাড়ানোর বিষয়টি গুরুত্ব পাবে। ২৭ তারিখ রাতে বাংলাদেশ ত্যাগ করবেন নরেন্দ্র মোদি।