ইউনিক আইডিই হবে জাতীয় পরিচয়পত্র, যে তথ্য দিতে হবে শিক্ষার্থীদের
দেশের তিন কোটির বেশি শিক্ষার্থীকে ইউনিক আইডি (একক পরিচয়) দেবে সরকার। পাঁচ বছরের প্রাক-প্রাথমিক থেকে ১৭ বছর বয়সী দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীরা পাবে এ আইডি। সিভিল রেজিস্ট্রেশন অ্যান্ড ভাইটাল স্ট্যাটিসটিকস (সিআরভিএস) বাস্তবায়নের আলোকে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ১০ বা ১৬ ডিজিটের শনাক্ত নম্বর থাকবে এতে। পরে শিক্ষার্থীর জাতীয় পরিচয়পত্রের সঙ্গে ওই তথ্য সমন্বয় করা হবে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, শিক্ষার্থীদের জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরিতে আলাদা তথ্য সংগ্রহের প্রয়োজন হবে না। শিক্ষার্থীদের ইউনিক আইডি দেওয়া ও ডেটাবেস প্রস্তুতের কাজ শুরু হচ্ছে শিগগিরই। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দুই বিভাগ, অধিদপ্তর, শিক্ষা বোর্ড ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য সমন্বিতভাবে শিক্ষা তথ্য ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি করা হচ্ছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, শিক্ষা তথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরোর (ব্যানবেইস) আইইআইএমএস প্রকল্পের মাধ্যমে এমন পদ্ধতি চালু হচ্ছে। এর আওতায় ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ডেটাবেস প্রস্তুত করে ইউনিক আইডি দেওয়া হবে। এ জন্য তথ্য সংগ্রহের কাজ বাস্তবায়নে শিক্ষা কর্মকর্তা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে।
সূত্র জানায়, শিক্ষার্থী প্রোফাইল প্রণয়ন ছকে প্রতিষ্ঠানের নাম, উপজেলা, জেলা, ইএমআইএস নম্বর দিতে হবে। নাম বাংলায় ও ইংরেজিতে লিখতে হবে। এছাড়া জন্মসনদ নম্বর, জন্মতারিখ, জন্মস্থান, জেন্ডার, জাতীয়তা, ধর্ম উল্লেখ থাকতে হবে। কোন শ্রেণি এবং কোন শাখায় অধ্যয়নরত তাও রোলসহ উল্লেখ করতে হবে। কাব স্কাউট সদস্যের তথ্যও জানাতে হবে। প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীর ক্ষেত্রে তা উল্লেখ করতে হবে। থাকেব রক্তের গ্রুপ। ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর শিক্ষার্থী হলে তাও উল্লেখ করতে হবে।
এতে প্রথমে মা ও পরে বাবার নাম লিখতে হবে। পিতা-মাতার অবর্তমানে অভিভাবকের তথ্য দিতে হবে। শিক্ষার্থীর বর্তমান পূর্ণাঙ্গ ঠিকানা উল্লেখ করতে হবে। এসব তথ্য শ্রেণিশিক্ষক ও প্রধান শিক্ষক প্রত্যয়ন করবেন। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর শিক্ষার্থীদের প্রোফাইল তৈরি করবে এবং ইউনিক আইডি কার্ড দেবে। ইউনিক আইডি কার্ড প্রস্তুতের জন্য জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাদের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করেছে অধিদপ্তর।
এ প্রসঙ্গে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালক প্রফেসর ড. সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক জানান, মাউশি থেকে তথ্য চেয়ে সব শিক্ষা অফিসে চিঠি পাঠানো হয়েছে। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরের ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ডেটাবেস প্রস্তুত এবং ইউনিক আইডি প্রদান কার্যক্রম শুরু হবে শিগগিরই। এ জন্য নির্ধারিত ছকে শিক্ষার্থীদের মৌলিক তথ্য ও শিক্ষাসংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহের পর ডেটা এন্ট্রির কাজ সম্পন্ন হবে। এজন্য সঠিক তথ্য দিয়ে এ কাজ সফলভাবে বাস্তবায়নে সবাইকে সহযোগিতা করতে বলেছে শিক্ষা অধিদপ্তর।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আলমগীর মুহম্মদ মনসুরুল আলম বলেন, অধিদপ্তরের আওতায় বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের ইউনিক আইডি দেওয়া হবে। এর তথ্য ছক প্রকাশ করা হয়েছে। প্রকাশিত ছকে শিক্ষার্থীর নাম-ঠিকানাসহ যাবতীয় তথ্য চাওয়া হয়েছে। এসব তথ্য শ্রেণিশিক্ষক ও প্রধান শিক্ষক প্রত্যয়ন করবেন বলে জানান তিনি।