এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে ধর্ষণ: বিচার হবে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে
সিলেটের এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে ধর্ষণের ঘটনার বিচার হবে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে। আলোচিত ঘটনা হিসেবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এ–সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা সম্প্রতি গেজেট আকারে প্রকাশ করা হয়েছে।
আলোচিত মামলাটি সিলেটের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ গঠন করে সাক্ষ্য গ্রহণ পর্যায়ে ছিল। ধর্ষণ ও চাঁদাবাজির দুটি পৃথক মামলা একই আদালতে একসঙ্গে বিচার করা নিয়ে মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবীরা উচ্চ আদালতের শরণাপন্ন হওয়ায় মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ আজ রবিবার পর্যন্ত মুলতবি ছিল।
আদালত স্থানান্তরের নির্দেশনা হওয়ায় মামলার কার্যক্রম মুলতবি রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ট্রাইব্যুনালের সরকারি কৌঁসুলি (পাবলিক প্রসিকিউটর) রাশেদা সাঈদা খানম। আজ দুপুরে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘দুটি মামলা একসঙ্গে বিচারকার্য নিয়ে উচ্চ আদালতের একটি নির্দেশনার জন্য নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য গ্রহণ কার্যক্রম মুলতবি রাখা হয়। এ অবস্থায় আদালত স্থানান্তরের নির্দেশনার বিষয়ে আমরা অবহিত হয়েছি। নির্দেশনার গেজেট হাতে এলে মামলার সব নথিপত্র দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হবে এবং সেখানেই বিচারপ্রক্রিয়ার পরবর্তী কার্যক্রম চলবে।’
উল্লেখ্য, গত বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর রাতে এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে স্বামীকে আটকে রেখে এক তরুণীকে (২০) দল বেঁধে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা হয়। তার স্বামী বাদী হয়ে মহানগর পুলিশের শাহপরান থানায় ছাত্রলীগের ছয়জনের নাম উল্লেখ করে এবং দুজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা করেন। ঘটনার পর আসামিরা ছাত্রাবাস থেকে পালিয়ে গেলেও তিন দিনের মধ্যে ছয় আসামি ও সন্দেহভাজন দুজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ ও র্যাব।
গ্রেপ্তারের পর আটজন আসামিকে পাঁচ দিন করে রিমান্ডে নেয় পুলিশ। পরে সবাই আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়ে ঘটনার দায় স্বীকার করেন। আসামিদের ডিএনএ নমুনা পরীক্ষায় আটজন আসামির মধ্যে ছয়জনের ডিএনএর মিল পাওয়া যায়। ধর্ষণ ও চাঁদাবাজির ঘটনার দুটি ভাগে তদন্ত করে পুলিশ দুটি মামলায় রূপান্তর করে।
গত বছরের ৩ ডিসেম্বর ধর্ষণ ও চাঁদাবাজির পৃথক দুটি অভিযোগপত্র আদালতে জমা দেন তদন্ত কর্মকর্তা ও মহানগর পুলিশের শাহপরান থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ইন্দ্রনীল ভট্টাচার্য। অভিযোগপত্রে সাইফুর রহমান, শাহ মাহবুবুর রহমান ওরফে রনি, তারেকুল ইসলাম ওরফে তারেক, অর্জুন লস্কর, আইনুদ্দিন ওরফে আইনুল ও মিসবাউল ইসলাম ওরফে রাজনকে দল বেঁধে ধর্ষণের জন্য অভিযুক্ত করা হয়। আসামি রবিউল ও মাহফুজুরকে ধর্ষণে সহায়তা করায় অভিযুক্ত করা হয়। আট আসামি বর্তমানে কারাগারে। তারা সবাই ছাত্রলীগের কর্মী হিসেবে পরিচিত।