ছুটি শেষ হচ্ছে কাল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কি খুলবে?
- শিউলী রহমান
- প্রকাশ: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ১০:৫৪ AM , আপডেট: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ১১:১৭ AM
করোনাভাইরাসের কারণে গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে বন্ধ রয়েছে দেশের সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। সর্বশেষ দফায় আগামীকাল রোববার (২৮ ফেব্রুয়ারি) পর্যন্ত ছুটি ঘোষণা করেছে সরকার। তবে এরপর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হবে কিনা সে বিষেয়ে এখনো কিছু জানানো হয়নি। এ পরিস্থিতিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলছে কিনা তা জানার আগ্রহ রয়েছে সবার। এছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার দাবি ক্রমশই জোরালো হচ্ছে। তবে সবার ভ্যাকসিন নিশ্চিত না হওয়ায় ১ মার্চ থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার সম্ভাবনা কম বলেই অনেকে মনে করছেন।
এ পরিস্থিতির মধ্যেই স্কুল-কলেজ খোলার জন্য পরিবেশ পর্যালোচনা করতে আজ শনিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা হবে। বিকেল ৩টায় এ সভায় বসবেন নীতি নির্ধারকরা। গত বৃহস্পতিবার মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালক সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক পটুয়াখালী ও বরগুনা জেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিদর্শন শেষে গতকাল শুক্রবার সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
তিনি বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এ পর্যালোচনা সভা আহবান করা হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে শিক্ষা মন্ত্রণালয়, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে নিয়ে এ সভা অনুষ্ঠিত হবে। আগামী ১ মার্চ থেকে স্কুল-কলেজ খোলার জন্য পরিবেশ পর্যালোচনা করছে সরকার। শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন ছাড়াও মন্ত্রিপরিষদসচিব, দুই মন্ত্রণালয়ের সচিব ও স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিবসহ সংশ্লিষ্টরা বৈঠকে উপস্থিত থাকবে বলে জানা গেছে।
ইতোমধ্যে আরও প্রায় তিনমাস পর আগামী ২৪ মে থেকে বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়ার কথা জানিয়েছে সরকার। এর আগে ১৭ মে থেকে খুলবে আবাসিক হল। তার আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। দেশের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদেরও ভ্যাকসিন প্রদান কার্যক্রম শুরু হয়েছে। সরকারের বিভিন্ন মহল থেকে এর আগে একাধিকবার জানানো হয়েছে, ভ্যাকসিন প্রদান করেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা হবে। সে হিসেবে ১ মার্চ থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা হচ্ছে না বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এছাড়া সে ধরনের প্রস্তুতিও নিতে দেখা যায়নি।
জানা গেছে, আগামী ১৭ এপ্রিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের করোনা টিকার প্রথম ডোজ দিতে চায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সে লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থ নিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। এ প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রাির মো. এনামউজ্জামান বলেছেন, গত বুধবার ইমেইলের মাধ্যমে টিকা চেয়ে দুই মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আগামী ১৭ এপ্রিল করোনা ভাইরাসের টিকা দেয়া হবে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে প্রায় চার লাখ ছয় হাজার ৪৬৯ জন শিক্ষক রয়েছে। আর কর্মচারীর সংখ্যা এক লাখ ৬২ হাজার ৮৬১ জন। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রায় ১৫ হাজার ৫২৪ জন। এদিকে আর প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, প্রাথমিকে শিক্ষক আছেনছয় লাখ ৮৫ হাজার ৪০০ জন। এরমধ্যে প্রাথমিকসহ অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা ইতোমধ্যে টিকা নেওয়া শুরু করেছেন।
তাদের টিকা প্রদান প্রসঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সেন্টারের (এমআইএস) পরিচালক অধ্যাপক ডা. মিজানুর রহমান গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, যেসব শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীর তথ্য তালিকায় আছে, তারা ওয়েবসাইটে রেজিস্ট্রেশন করে টিকা নিতে পারবেন। এ পর্যন্ত প্রায় সাড়ে সাত লাখ শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীর তালিকা পেয়েছেন বলেও তিনি জানান।
এছাড়া নিবন্ধন করে শিক্ষকরা টিকা নিতে পারবেন বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা। তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘চল্লিশ বছরের উপরের সবাই টিকা পাচ্ছেন। কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ের কম সংখ্যক শিক্ষকের বয়স চল্লিশের কম। প্রাথমিক বা মাধ্যমিক স্কুলে কিছু শিক্ষকের বয়স কম। তারা রেজিস্ট্রেশন করে টিকা নেবে।’