সংস্কৃতিচর্চা নতুন প্রজন্মকে জঙ্গিবাদ থেকে দূরে রাখবে : তথ্যমন্ত্রী
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১৯ জানুয়ারি ২০২১, ০৬:১৪ PM , আপডেট: ১৯ জানুয়ারি ২০২১, ০৬:১৪ PM
সংস্কৃতিচর্চার বৃদ্ধি নতুন প্রজন্মকে জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসবাদ থেকে দূরে রাখবে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
সব্যসাচী নাট্যজন মমতাজউদদীন আহমদের ৮৭তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে রাজধানীতে শিল্পকলা একাডেমির
জাতীয় নাট্যশালায় গতকাল সোমবার রাতের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।
কিংবদন্তী নাট্যকার মমতাজউদদীন আহমদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দেশে আশি-নব্বইয়ের দশকে অনেক মঞ্চ নাটক হতো। স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের সময় অনেক পথ নাটক হতো। এখন সেভাবে হচ্ছে না। আবার মঞ্চ নাটকের সেই সুদিন ফিরিয়ে আনা প্রয়োজন। কারণ সাংস্কৃতিক চর্চা যতই ব্যাপক হবে, ততই আমাদের নতুন প্রজন্মের মনন তৈরি ও নিজস্ব সংস্কৃতির সংরক্ষণ হবে। আকাশ সংস্কৃতির বিজাতীয় থাবা থেকে মুক্ত থাকা সহজ হবে। দেশের নাট্যজনদের এবিষয়ে পরিকল্পনার অনুরোধ জানাই।’
তথ্যমন্ত্রী এ সময় তার নিজের নাট্যজগতে বিচরণের স্মৃতিচারণ করে বলেন, তিনি চট্টগ্রামের তীর্যক নাট্যদলের মঞ্চ ও যাত্রাদলের সদস্য ছিলেন। মন্ত্রী দেশের সব জেলায় মঞ্চ নাটক উৎসাহিত করার জন্য প্রতিযোগিতা এবং বিভিন্ন জেলায় ১০দিনব্যাপী নাটক মঞ্চায়নের প্রস্তাবনা দেন এবং বাংলাদেশ টেলিভিশনের ঢাকা ও চট্টগ্রাম কেন্দ্র থেকে মঞ্চ নাটক প্রচারের উদ্যোগ নেবেন বলেও জানান।
তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান বলেন, ‘এটি মনে করার কোনো কারণ নেই যে, আকাশ সংস্কৃতি বা ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার কারণে মঞ্চ নাটক হারিয়ে যাবে। তাহলে সমস্ত থিয়েটার বন্ধ হয়ে যেত, কিন্তু সেটি তো হয়নি। যেমন আমেরিকায় এতো ওটিটি প্লাটফর্ম, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, এতো কিছুর পরও সেখানে কিন্তু ছয় হাজার সিনেমা হল আছে। ভারতে আট হাজারের কাছাকাছি সিনেমা হল আছে। একইসাথে ইউরোপে প্রচুর থিয়েটার হল আছে এবং সেখানে প্রচুর লোক যায়, লাইন ধরে টিকেট কেটে মঞ্চের পরিবেশনা দেখে। আমরাও তেমন ছিলাম, সেই জায়গাতেই আবার ফেরা দরকার। কারণ সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড যত বৃদ্ধি পাবে, তত আমাদের জাতীয়তাবোধ, সংস্কৃতিবোধ এবং দেশাত্মকবোধ আরো গভীরে প্রোথিত হবে। অন্যথায় এগুলোকে রক্ষা করার ক্ষেত্রে আমরা যে বৈরি পরিবেশের সম্মুখীন হচ্ছি, সেটি আরো বৈরি হতে থাকবে।’
শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক ও বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের চেয়ারম্যান নাট্যকার লিয়াকত আলী লাকীর সভাপতিত্বে ও প্রবীর দত্তের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা আতাউর রহমান, রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক বিশ্বজিৎ ঘোষ, বাংলাদেশ শিশু একাডেমির চেয়ারম্যান লাকী ইনাম, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ, নাট্যগোষ্ঠী থিয়েটার সভাপতি ড. নিলুফার বানু, সাধারণ সম্পাদক অশোক রায় নন্দী, সাবেক সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ বণিক ও রেজাউল একরাম রাজু প্রয়াত নাট্যজন মমতাজউদদীন আহমদের স্মৃতিচারণ করেন।
সংগীত ও আবৃত্তি পরিবেশন করেন মুনিরা ইউসুফ মেমী ও জিয়াউল হাসান কিসলু। সবশেষে মমতাজউদদীন আহমদের নাটক ‘ফলাফল নিম্নচাপ’ পরিবেশিত হয়।
এদিকে, আজ মঙ্গলবার সকালে বিশিষ্ট অভিনেতা, নাট্য পরিচালক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মুজিবুর রহমান দিলুর ইন্তেকালে শোক জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। তথ্যমন্ত্রী তাঁর শোকবার্তায় বলেন, দেশমাতৃকা ও সংস্কৃতি অঙ্গণে মজিবুর রহমান দিলুর অবদান স্মরণীয় হয়ে থাকবে।