জঙ্গি পুনর্বাসন

জঙ্গি পুনর্বাসন: বিশ্ববিদ্যালয়-মেডিকেলের দুই শিক্ষার্থীসহ ৯ তরুণ ফিরছে স্বাভাবিক জীবনে

  © সংগৃহীত

উচ্চশিক্ষিত এক দম্পত্তিসহ ৯ তরুণ-তরুণীর একটি দলকে গ্রেপ্তার না করে পুনর্বাসন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে র‌্যাব। বৃহস্পতিবার (১৪ জানুয়ারি) সকালে র‌্যাব সদর দফতরের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদের কাছে তারা আত্মসমর্পণ করেন। এসময় স্বরাষ্টমন্ত্রী ও আইজিপি জঙ্গিদের তাদের পরিবারের হাতে তুলে দেন।

এসময় স্বরাষ্টমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, বাংলাদেশের মানুষ কখনো জঙ্গিবাদকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয় না। এজন্যই আমরা জঙ্গিবাদ মোকাবিলায় অনেক খানি এগিয়ে গিয়েছি।

তিনি আরও বলেন, জঙ্গিবাদ নির্মূল করতে না পারলেও আমরা তা নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছি। আমরা জঙ্গি দমনে অনেকখানি এগিয়ে গিয়েছি। আমরা যে সব সময় কঠোর হস্তে জঙ্গি দমন করি। বিষয়টি তেমন না। আত্মসমর্পণের সুযোগ দিয়েও স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনছি।

র‌্যাব বলছে, বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো জঙ্গিদের সঠিক প্রক্রিয়ায় ডি-রেডিক্যালাইজেশন করে জঙ্গিবাদ থেকে ফিরিয়ে আনতে কাজ করেছেন তারা। দীর্ঘ সময় কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে তাদের উগ্র আদর্শকে ধ্বংস করা হয়েছে।

আত্মসমর্পণ করা জঙ্গি সদস্যদের মধ্যে আছেন জেএমবির ৬ জন এবং আনসার আল ইসলামের ৩ জন সদস্য। আত্মসমর্পণ করা জঙ্গিরা হলেন-  শাওন মুনতাহা ইবনে শওকত (৩৪), ডা. নুসরাত আলী জুহি (২৯), আসমা ওরফে রামিসা (১৮), মোহাম্মদ হোসেন হাসান গাজী (২৩), মো. সাইফুল্লাহ (৩৭),  (৬) মো. সাইফুল ইসলাম (৩১), মো. আবদুল্লাহ আল মামুন (২৬) মো. সাইদুর রহমান (২২), আবদুর রহমান সোহেল (২৮)।

শাওন মুনতাহা ইবনে শওকত সর্ম্পকে র‌্যাব জানায়, সিলেটের একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় হিযবুত তাহরিরে যুক্ত হন তিনি। পরবর্তীতে তিনি হিযবুত তাহরিরের বিশ্ববিদ্যালয় শাখায় শীর্ষ পর্যায়ে চলে যান। তিনি ২০০৯ সালে আনসার আল ইসলামে যোগ দেন। পরে ২০১১ সালে মেডিকেল ছাত্রী ডা. নুসরাতকে বিয়ে করে। স্ত্রী নুসরাতও জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ। পরবর্তীতে সংগঠনের নির্দেশনায় তিনি ঢাকায় চলে আসে। ২০১৭ সাল থেকে তার স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে ঢাকায় বসবাস শুরু করেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জোড়ালো অভিযানে গ্রেফতার আতঙ্কে তিনি ঢাকায় বিভিন্ন জায়গায় বাসা বদল করতে থাকেন।

আবিদা জান্নাত আসমা ওরফে রামিসা (১৮) সর্ম্পকে র‌্যাব জানায়, উগ্রবাদে আকৃষ্ট হওয়ার পর বাবা-মাকে না জানিয়ে ২০১৮ সালে আনসার আল ইসলামের এক সদস্যকে সাংগঠনিক সিদ্ধান্তে বিয়ে করে। শুরু হয় স্বামীর সঙ্গে আত্মগোপনের জীবন। আর্থিকভাবে সচ্ছল পরিবারের সন্তান হওয়ায় সে আত্মগোপনে থেকে ফেরারি জীবনের প্রতি বীতশ্রদ্ধ হয়ে পড়ে। ফলে সাংগঠনিকভাবে পরিচিত স্বজনের কাছে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার ইচ্ছা ব্যক্ত করে।