১৪ মাসের শিশুকন্যাকে দত্তক দিবেন বাবা, নেপথ্যে করোনাজনিত বেকারত্ব
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১৬ ডিসেম্বর ২০২০, ১২:২৪ AM , আপডেট: ১৬ ডিসেম্বর ২০২০, ১২:২৪ AM
তিন সন্তান রেখে দুরারোগ্য ব্যধিতে আক্রান্ত হয়ে স্ত্রী মারা গেছে ১৭ দিন আগে। নিজের শারীরিক বিভিন্ন অসুখের কারণে এখন আর ইজিবাইক চালাতে পারছেন না। আয় উপার্জন একরকম বন্ধ। এ অবস্থায় তিন সন্তানের মুখে আহার দেওয়া অসম্ভব হয়ে পড়ায় ১৪ মাসের শিশুসন্তানকে দত্তক দিতে চাচ্ছেন এক বাবা। তাঁর বাড়ি ময়মনসিংহের নান্দাইল পৌরসভার চন্ডীপাশা মহল্লায়।
তার নাম মো. আব্দুল হান্নান মিয়া (৫০)। তার বড় মেয়ে নুসরাত জাহান নুন (১০), ছেলে মো. মোস্তাফিজুর রহমান ও দুধের শিশু সিদরাতুল মুনতাহা তোয়া। চন্ডীপাশা মহল্লায় তাঁর বাড়িতে দুই শতক জমির ওপর জরাজীর্ণ একটি ঘর। প্রায় এক যুগ আগে বিয়ে করেন আনোয়রা বেগমকে। গত দুই বছর ধরে দুরারোগ্য ব্যধিতে আক্রান্ত হয়ে ভুগছিলেন। তারপরও প্রতিবেশীদের কাজ কর্মকরে ও স্বামীর আয় দিয়েই কোনোমতে সংসার চলত।
সোমবার সন্ধ্যায় হান্নান মিয়া জানান, স্ত্রী বেঁচে থাকলে ছিলেন এক ভরসা। কিভাবে সংসারের খরচ ছাড়াও সন্তানদের ভরণপোষণ করেছেন তা ছিল অনেকটা স্বপ্নের মতো। গত ১৭ দিন আগে মারা যাওয়ার পর আমি এখন চোখে অন্ধকার দেখছি। নিজের শরীর খারাপ থাকলেও সন্তানদের ভরণপোষণ করতে হিমশিম খাচ্ছি। বেশ কয়েক বছর ধরে একটি সিগারেট কোম্পানিতে চাকরি করলেও করোনাকালে চাকরি গেছে। পরে ইজিবাইক চালিয়ে আয় করলেও শরীরের অবস্থা খারাপ হওয়ায় তাও বন্ধ হয়ে গেছে। এ অবস্থায় মানুষের কাছে হাত পেতে ধারদেনা করে সন্তানদের দেকভাল করতে হচ্ছে।
তিনি বলেন, আর পারছি না। সন্তানদের মুখে একবেলা আহার দিলে আরেক বেলা দিতে পারছি না। ১৪ মাসের শিশু তোয়ার দুধ জোগাড় হচ্ছে না। চোখের সামনে খিদায় কান্না করে। এখন সন্তানদের তাকিয়ে নিজেও মরতে পারি না। তাই মনস্থির করছি কেউ যদি আমার সোনার ধনকে দত্তক নিতেন তাহলে অন্ততপক্ষে অন্য দুই সন্তানকে নিয়ে খেয়ে না খেয়ে জীবন পার করতাম। অন্যথায় সুহৃদয়বান কেউ যদি একটা আয়ের পথ করে দিতেন।