০৩ ডিসেম্বর ২০২০, ১৮:৫২

বউভাতের অনুষ্ঠানে বরের জানাজা, কনে হাসপাতালে

বর মো. রফিকুল ইসলাম  © সংগৃহীত

পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলায় বৌভাতের দিন বর মো. রফিকুল ইসলামের (৩০) মৃত্যু হয়েছে। বুধবার দুপুরে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। পরে বউভাতের অনুষ্ঠানের প্যান্ডেলেই বরের জানাজার নামাজের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

এদিকে নববধূ স্বামীর অকালমৃত্যুর খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। তাঁকে বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

স্বজনরা জানিয়েছেন, গত কয়েক দিন আগে উপজেলার মাধবখালী ইউনিয়নের সফিকুল ইসলামের ছেলে রফিকুল ইসলামের সঙ্গে বেতাগী ভাসনদা এলাকার আবদুল মান্নানের মেয়ে ময়নার বিয়ে হয়। সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) ময়নাদের বাড়িতে বিবাহোত্তর অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বুধবার ছেলের বাড়িতে বৌভাতের আয়োজন করা হয়। কিন্তু ক্ষণিকে বিয়েবাড়ির আনন্দ রূপ নিল বিষাদে। সেই সঙ্গে নামে কান্নার রোল।

যেখানে বউভাত অনুষ্ঠানের অতিথিদের আপ্যায়নের জন্য প্যান্ডেল সাজানো হয়েছিল, সেখানেই বুধবার বিকেলে পড়ানো হয় রফিকুলের জানাজা। এদিকে নববধূ স্বামীর অকালমৃত্যুর খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। তাঁকে বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

জানাজায় অংশ নেওয়া মাধবখালী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. মনিরুল ইসলাম তালুকদার বলেন, দাওয়াত ছিল বউভাতের। কিন্তু সেখানে পড়তে হলো জানাজা। এমন মৃত্যু কেউ মেনে নিতে পারছেন না।

স্থানীয় বাসিন্দা নুরুল হক বলেন, রফিকুল ইসলাম দীর্ঘদিন ধরে থ্যালাসেমিয়া রোগে আক্রান্ত। কিছুদিন পর পর তার রক্ত পরিবর্তন করতে হয়। রফিকুল অসুস্থ থাকায় এতদিন বিয়ে করেননি। সম্প্রতি পারিবারিকভাবে তার বিয়ে হয়। সোমবার অনুষ্ঠান করে নববধূকে বাড়িতে তুলে আনেন। বুধবার ছেলের বাড়িতে বৌভাতের আয়োজন করা হয়। মেয়েদের বাড়ির লোকজন ও স্থানীয় আত্মীয়-স্বজন বুধবার অনুষ্ঠানে উপস্থিত হন।

কিন্তু হঠাৎ করে সকাল ১০টার দিকে রফিকুল অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাৎক্ষণিকভাবে দুপুর ১২টার দিকে তাকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

কনের বাবা আবদুল মান্নান হাওলাদার বলেন, আমার মেয়ের জীবনে এমন একটা ঘটনা ঘটে গেল। তাঁদেরও একমাত্র ছেলে। আমাদেরই কী সান্ত্বনা দেবে, তাঁদেরই বা কী সান্ত্বনা দেব। আমার বলার কোনো ভাষা নেই।