ইচ্ছার বিরুদ্ধে ধর্মীয় পোশাকে নিষেধাজ্ঞা

প্রতীকী
প্রতীকী

জনস্বাস্থ্য ইন্সটিটিউটে কর্মরত মুসলমান নারীদের পর্দা ও পুরুষদের টাকনুর ওপর কাপড় পরিধানের নিদের্শনা দিয়ে তোপের মুখে পড়েছেন প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক ডা. মুহাম্মদ আবদুর রহিম। এ পরিস্থিতিতে বিষয়টি প্রত্যাহার করে দুঃখ প্রকাশও করেছেন তিনি। তিনি বলেছেন, আমি এ নির্দেশনাটি সবার জন্য দেইনি। শুধু মুসলিম নারী-পুরুষের জন্য দিয়েছিলাম।

এদিকে কোনো ব্যক্তিকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে ধর্মীয় পোশাক পরতে বাধ্য না করার কথা বাংলাদেশে হাইকোর্টের রায়ে বলা আছে। ২০১০ সালের ৪ অক্টোবর সোমবার বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী ও বিচারপতি শেখ মো. জাকির হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ আদেশ দেন যে, কোনো ব্যক্তিকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে কোন ধর্মীয় পোশাক পরতে বাধ্য করা যাবে না।

রায়ে বলা আছে, ১৯৭২ সালের মূল সংবিধানের চার মূলনীতির অন্যতম হচ্ছে ধর্মনিরপেক্ষতা। এটি পঞ্চম সংশোধনীর রায়ের মাধ্যমে পুনঃস্থাপিত হয়েছে। কাজেই কোনো ব্যক্তিকে কোনোভাবেই ধর্মীয় পোশাক পরতে বাধ্য করা যাবে না। জোর করে কোন পোশাক পরানো মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী। প্রত্যেক নাগরিকেরই স্বাধীনভাবে ধর্ম পালন ও ধর্মীয় পোশাক পরিধানের অধিকার রয়েছে।

২০১০ সালের ২২ অগাস্ট একটি দৈনিকে ‘নাটোরের সরকারি রানী ভবানী মহিলা কলেজ, বোরকা না পরলে আসতে মানা’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হলে সেই সংবাদটি আদালতের দৃষ্টিতে আনেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মাহবুব শফিক ও কে এম হাফিজুল আলম।

তাঁরা বলেন, পোশাক নির্বাচন করা ব্যক্তি স্বাধীনতার বিষয়। এ ব্যাপারে জোর করা মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী। ছেলেদের পাশাপাশি মেয়েদের খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করতে না দেওয়াও বৈষম্যমূলক। তাঁদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত স্বতপ্রণোদিত হয়ে রুল জারিসহ অর্ন্তবর্তীকালীন নির্দেশ দেন।

এদিকে বিষয়টি নিয়ে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন আজ বৃহস্পতিবার বলেছেন, বাংলাদেশ একটি ধর্মনিরপেক্ষ দেশ। বিভিন্ন ধর্মের লোকেরা অফিসে কাজ করেন। সুতরাং এই জাতীয় বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ড্রেস কোড জারি করা যায় না। তিনি বলেন, নোটিশে যেমনটি উল্লেখ করা হয়েছে, তেমন কোনো অফিসিয়াল ড্রেস কোড বাংলাদেশে নেই। বিষয়টি আমি খতিয়ে দেখব এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবো।


সর্বশেষ সংবাদ