বাংলাদেশে ফ্রান্সের পণ্য বয়কটের ডাক কেন?

ফ্রান্সের বিভিন্ন কোম্পানির একটি তালিকা প্রকাশ
ফ্রান্সের বিভিন্ন কোম্পানির একটি তালিকা প্রকাশ  © সংগৃহীত

সম্প্রতি ফ্রান্সে মহানবী (সা.)-কে নিয়ে অবমাননার ঘটনায় বিশ্বজুড়ে ফরাসী পণ্য বর্জনে হ্যাশ ট্যাগ (#BoycottFrenceProducts) ব্যবহৃত হচ্ছে। সেই ডাকে সাড়া দিয়ে ফরাসী পণ্য বয়কটের ঘোষণা দিয়েছে কুয়েত। এ প্রতিবাদে অংশ নিয়েছেন বাংলাদেশি ব্যবহারকারীরাও।

আশিকুর রহমান রাকিব নামে এক বাংলাদেশি ব্যবহারকারী হ্যাশ ট্যাগ দিয়ে লিখেছেন, ফ্রান্সের দুটো সরকারি বিল্ডিংয়ে নবীজির ব্যঙ্গচিত্র প্রদর্শন করা হচ্ছে। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট বলেছেন, তারা ব্যঙ্গচিত্র প্রদর্শন বন্ধ করবে না। এটা তাদের ‘ফ্রিডম অব স্পিচ’ (বাক-স্বাধীনতা)। এই ফ্রান্সেই আবার হিজাব নিষিদ্ধ।

তিনি লিখেছেন, কী চমৎকার তাদের নিয়ম! ফ্রান্স রাষ্ট্রীয়ভাবে মুহাম্মদ (সা.)-এর বিরুদ্ধে এমন কুরুচিপূর্ণ প্রচারণা চালাচ্ছে। সারা পৃথিবী চেয়ে চেয়ে দেখছে। সম্প্রতি ফ্রান্স সরকার ৬৮টি মসজিদ ও মাদ্রাসা বন্ধ করে দিয়েছে। আরও অসংখ্য মসজিদ-মাদ্রাসা বন্ধের তালিকায় আছে।

মো. জহিরুল ইসলাম নামে একজনে লিখেছেন, হৃদয়ের রক্তক্ষরণ যেন বন্ধ হচ্ছে না। ফ্রান্সের রাজধানীতে বহুতল দুটি ভুবনে প্রকাশ্যে আঁকা হয়েছে নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর ব্যঙ্গচিত্র কার্টুন, ব্যাপক পুলিশি পাহারায় তার সুরক্ষা নিশ্চিত করেছে ওই দেশীয় প্রশাসন।

তিনি লিখেন, এটা কি ধরনের বাকস্বাধীনতা? এটা কি উস্কানিমূলক, বেপরোয়া, আগ্রাসন এবং উগ্রতা নয়? আমাদের কি সময় আসেনি এসব কাফেরদের বর্জন করা। তাদের পন্য ডাস্টবিনে নিক্ষেপ করা, বিশ্বব্যাপী মুসলিম সংগঠনের প্রতি আহ্বান করবো আপনারা ফ্রান্সের ব্যাপারে শক্ত অবস্থান নিন।

এদিকে কুয়েতের বিভিন্ন মার্কেট থেকে ফ্রান্সের পণ্য সরিয়ে নেয়া হচ্ছে। এর নানা ছবি ও ভিডিও ছড়িয়ে পড়ছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। অনেকেই হ্যাশ ট্যাগের সঙ্গে জুড়ে দিচ্ছেন এসব ছবি ও ভিডিও। রাকিব আহসানউল্লাহ লিখেছেন, বিশ্বের বিভিন্ন নিউজ সূত্রে জানলাম, সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্যাম্পেইনে কুয়েতে মার্কেট থেকে ফ্রান্সের পণ্য সরিয়ে ফেলতেছে। স্যালুট।

ফ্রান্সের সরকারি বিভিন্ন সংস্থার দেয়ালে শার্লি এবদোর সেই বিতর্কিত ১২টি কার্টুন প্রদর্শন করা হচ্ছে। দেশটির সরকার এবং কয়েকটি গণমাধ্যমের এমন সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশন (ওআইসি)। ফ্রান্সের কয়েকটি ভবনের সামনে এবং সরকারের সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে ইসলামকে সম্পৃক্ত করা এবং নবী মুহাম্মদকে অপমানজনক প্রচারণার সমালোচনা করেছে সংস্থাটি।

ওআইসির বিবৃতিতে বলা হয়, আমরা নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর অবমাননা, মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিতে ক্রমাগত আঘাতের নিন্দা জানাই। রাজনৈতিক স্বার্থে ফ্রান্সের নাগরিক ও ইসলামকে মুখোমুখি দাঁড় করানোর ঘৃণ্য চেষ্টা করছেন কতিপয় ফরাসি কর্মকর্তা। বাক-স্বাধীনতার নামে কারও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানা কখনোই গ্রহণযোগ্য নয়। সংস্থাটি ফ্রান্সকে তার বৈষম্যমূলক নীতিগুলো পর্যালোচনা করার আহ্বান জানিয়েছে।

এদিকে আন্দোলনকারীরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক-টুইটার পোস্টে ফ্রান্সের বিভিন্ন কোম্পানির একটি তালিকা প্রকাশ করছেন। যেখানে ফ্রান্সের মালিকানাধীনা কোম্পানিগুলোর লোগো ও নাম ব্যবহার করা হয়েছে।


সর্বশেষ সংবাদ