করোনায় ঝরে পড়া শিক্ষার্থী ও বাল্যবিবাহ বাড়ার আশঙ্কা
করোনা সংক্রমণের ভয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ায় শিক্ষার্থীরা স্কুলবিমুখ হয়ে পড়ছে। বিশেষত মেয়ে শিক্ষার্থীর ঝরে পড়ার হার বাড়ছে, বাল্যবিবাহ বেড়ে যাচ্ছে। বাল্যবিবাহের দিক দিয়ে বিশ্বের শীর্ষ ১০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। তার উপর গত জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরে এর হার বেড়েছে ২২০ শতাংশ পর্যন্ত। বিশিষ্টজনদের আশঙ্কা, স্কুল খুলতে দেরি হওয়ার সঙ্গে এই সমস্যাগুলোও বাড়তে পারে।
গতকাল রবিবার ব্র্যাক আয়োজিত এক ডিজিটাল সংলাপ অনুষ্ঠানে বক্তারা এই কথা বলেন। আন্তর্জাতিক কন্যা শিশু দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এই সংলাপের শিরোনাম ছিল- ‘মেয়েদের স্কুলে ফেরাতেই হবে’।
এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। আরো উপস্থিত ছিলেন, নারী অধিকারকর্মী এবং সংসদ সদস্য এরোমা দত্ত, ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধূরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সাদেকা হালিম, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার আমেনা বেগম, ঢাকাস্থ ব্রিটিশ হাইকমিশনের সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট এডভাইজার তাহেরা জাবীন, অস্ট্রেলিয়ান হাই কমিশনের ফার্স্ট সেক্রেটারি সাইমন বাকলি। সংলাপটি সঞ্চালনা করেন, ব্র্যাকের জেন্ডার জাস্টিস এন্ড ডাইভারসিটি কর্মসূচির পরিচালক নবনীতা চৌধুরী।
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, ডিজিটাল ক্লাস করানোর ক্ষেত্রে আমরা বেশিরভাগ শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছাতে পেরেছি। শুধু সরকার নয়, বেসকারি পর্যায়েও অনেক প্রতিষ্ঠান এভাবে ক্লাস নিচ্ছে। তাই শিক্ষার্থীদের যে এই পরিস্থিতিতে স্কুলে যেতেই হবে- এমনটি ভাবা যাবে না। অনেক দেশে তো স্কুল খোলার পরে আবার বন্ধ হয়ে গেছে। তাই আমাদেরও বুঝেশুনে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
কন্যাশিশুদের বিষয়ে তিনি বলেন, এখন প্রতিটি ইউনিয়নে জš§ নিবন্ধন ডিজিটালাইজড হয়ে যাচ্ছে। তাই ভুয়া সনদ দেখিয়ে বয়স বাড়িয়ে বিয়ে দেওয়া যাবে না। আর স্কুলের পাঠক্রমে নারী অধিকার, যৌন হয়রানি প্রভৃতি বিষয় অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে। শুধু কোভিড সংকট নয়, আগামীর সব ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় শিক্ষা ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানো হচ্ছে।
উল্লেখ্য, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে ব্র্যাক বাল্যবিবাহ নির্মূলে স্থানীয় পর্যায় থেকে জাতীয় পর্যায়ে কার্যকর ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। ব্র্যাকের প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত স্যার ফজলে হাসান আবেদের দিক নির্দেশনা অনুযায়ী ব্র্যাক এককভাবে এবং বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সাথে সমন্বয়ের মাধ্যমে বাল্যবিবাহ নির্মূলে বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে।