জাতীয় পরিচয়পত্র নিতে ফি গুনতে হবে প্রবাসীদের!
- টিডিসি ডেস্ক
- প্রকাশ: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০৯:২৮ AM , আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০২১, ০৩:৪৭ PM
প্রবাসে বাংলাদেশি নাগরিকদের এদেশে ভোটার হওয়া ও স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র (স্মার্টকার্ড) পেতে ফি গুনতে হবে। ৩০ মার্কিন ডলার ফি গুনতে হবে তাদের। আর তথ্য-উপাত্ত সংশোধনে ৩০ থেকে ৫০ ডলার ফি বা চার্জ পরিশোধ করতে হবে। একইভাবে ভোটার এলাকা পরিবর্তন, হারানো কার্ড তোলা ও ১৫ বছর পর কার্ড নবায়নেও বিভিন্ন অঙ্কের ফি দিতে হবে তাদের। সব ফি মার্কিন ডলারে পরিশোধ করতে হবে।
তুলনামূলকভাবে ছাড় পাবেন শিক্ষার্থী ও সাধারণ শ্রমিকরা। গালফ কো-অপারেশন কাউন্সিলভুক্ত (জিসিসি) দেশগুলোর শ্রমিক ও শিক্ষার্থীদের জাতীয় পরিচয়পত্র পেতে ২০ ডলার। অন্যান্য ফিও কম দিতে হবে। এসব ফি আরোপের প্রস্তাব করেছে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগ। প্রস্তাবে মিশন বা দূতাবাসগুলো থেকে স্মার্টকার্ড বিতরণের কথা বলা হয়েছে। আজ সোমবার অনুষ্ঠেয় কমিশন সভায় এসব ফি অনুমোদনের জন্য তোলা হচ্ছে। সভায় সিরাজগঞ্জ-১ ও ঢাকা-১৮ আসনের তফসিল ঘোষণা হতে পারে। এছাড়া নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়োগ বিধিমালা সংশোধনের এজেন্ডাও রয়েছে। একাধিক কর্মকর্তা জানান, বাংলাদেশে নাগরিকদের ভোটার হতে এবং প্রথমবার স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র পেতে কোনো ফি দিতে হয় না। ভোটার এলাকা পরিবর্তনেও কোনো ফি নেয় না ইসি। তবে হারানো জাতীয় পরিচয়পত্র উত্তোলনে প্রথমবার সাধারণ ২০০ টাকা ও জরুরিভাবে নিলে ৩০০ টাকা দিতে হয়। জাতীয় পরিচয়পত্র তথ্য সংশোধনে প্রথমবার নেয়া হয় ২০০ টাকা। সাধারণত দেশে ভোটার হওয়ার পর লেমিনেটেড জাতীয় পরিচয়পত্র দেয়া হয়। পরে এলাকাভিত্তিকভাবে স্মার্টকার্ড বিতরণ করা হয়। প্রবাসে প্রথমবারই স্মার্টকার্ড দেয়া হবে।
এ বিষয়ে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম বলেন, বিদেশে গিয়ে প্রবাসীদের ভোটার করা হবে। তাদেরকে প্রথমবারই স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র দ্রুততার সঙ্গে দেয়া হবে। মালয়েশিয়া, আবুধাবি ও যুক্তরাজ্যে ভোটার তালিকাভুক্তির কাজ শুরুর সময়ে প্রবাসীদেরই সুপারিশ ছিল ফি নিয়ে কার্ড দেয়া। তারা দ্রুত ও ভালো সার্ভিস পেতে চান। এছাড়া ফি নেয়া হলে সরকারের রাজস্ব বাড়বে। এসব বিবেচনায় ফি আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে।
তিনি বলেন, এ বিষয়ে কমিশন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন। যুক্তরাজ্যপ্রবাসীদের ভোটার তালিকাভুক্তির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ফির বিনিময়ে দ্রুত সেবা দেয়ার দাবি ওঠে। ফি ছাড়া দ্রুত গুনগত সেবা নিশ্চিত হয় না বলেও প্রবাসীরা জানান। এছাড়া অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠকে পাসপোর্ট অধিদফতরের মতো প্রবাসীদের ফি নিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্র দেয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়। ওই সিদ্ধান্তের আলোকে ফি প্রস্তাব করা হয়েছে।
সাধারণ প্রবাসীদের ফি: প্রস্তাবে বিদেশে অবস্থানরত অবস্থায় ভোটার হয়ে স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র পেতে গুনতে হবে ৩০ মার্কিন ডলার। বাংলাদেশে নতুন ভোটার হয়েছেন কিন্তু বিদেশে বসে কার্ড নিলে দিতে হবে ২০ মার্কিন ডলার। পেপার লেমিনেটেড জাতীয় পরিচয়পত্রের বদলে স্মার্টকার্ড নিলে দিতে হবে ১৫ ডলার। প্রবাসীদের জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য-উপাত্ত সংশোধনে প্রথমবার ৩০ ডলার, দ্বিতীয়বার ৪০ ডলার ও তৃতীয়বার ৫০ ডলার ফি দিতে হবে। প্রবাসীদের ভোটার এলাকা পরিবর্তনের জন্য ২৫ ডলার ফি দিতে হবে। মাইগ্রেশন, নষ্ট বা হারানো কার্ড তুলতে প্রবাসীদের প্রথমবার ২০ ডলার, দ্বিতীয়বার ৩০ ডলার ও তৃতীয়বার ৪০ ডলার দিতে হবে।
প্রবাসীদের ক্ষেত্রে সাধারণ বা জরুরি সেবার ক্যাটাগরি না রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে। ১৫ বছর পর স্মার্টকার্ড নবায়ন ফি ২৫ ডলার প্রস্তাব করা হয়েছে।
শিক্ষার্থী ও শ্রমিকদের ফি কম: জিসিসিভুক্ত দেশ যেমন- বাহরাইন, কুয়েত, ওমান, কাতার, সৌদি ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের শ্রমিকরা এ সুযোগ পাবেন। একই সুযোগ পাবেন জর্ডান, লিবিয়া, সাইপ্রাস, ইরান, ইরাক, লেবানন, ব্রুনাই, মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ায় অবস্থানরত শ্রমিকরা। শিক্ষার্থী ও এসব দেশের অবস্থানরত অবস্থায় শ্রমিকরা ভোটার হওয়া ও স্মার্টকার্ড পেতে হলে ২০ ডলার ফি দিতে হবে। এছাড়া বাংলাদেশে ভোটার হয়ে এসব দেশে অবস্থানরত অবস্থায় স্মার্টকার্ড নিতে ১৫ ডলার ও লেমিনেটেড কার্ডের পরিবর্তে স্মার্টকার্ড পেতে ১০ ডলার গুনতে হবে। জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য-উপাত্ত সংশোধনে প্রথমবার ১৫ ডলার, দ্বিতীয়বার ২০ ডলার ও তৃতীয়বার ২৫ ডলার ফি নির্ধারণের প্রস্তাব করা হয়েছে। ভোটার এলাকা মাইগ্রেশনের জন্য ১৫ ডলার এবং হারানো বা নষ্ট কার্ড পুনরায় তুলতে ১৫ থেকে ২৫ ডলার এবং কার্ড নবায়ন ফি ১৫ ডলার প্রস্তাব করা হয়েছে। এই দেশে অবস্থানরত শুধু সাধারণ শ্রমিকরা কম হারের এ ফি’র সুযোগ পাবেন।
তবে ডাক্তার, প্রকৌশলী, আইনজীবী, শিক্ষক ও কুটনীতিক মিশনে থাকা কর্মকর্তাসহ কয়েকটি পেশার মানুষ এর আওতাভুক্ত হবেন না। [সূত্র: যুগান্তর]