ট্রাম্পকে বিষ মেশানো চিঠি, এক নারী গ্রেপ্তার
হোয়াইট হাউজের ঠিকানায় বিষাক্ত রাইসিন ভরা খাম পাঠানোর সন্দেহে এক নারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি টেক্সাসের আরও পাঁচটি ঠিকানায় একই ধরনের খাম পাঠিয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। মঙ্গলবার (২২ সেপ্টেম্বর) ওই নারীকে নিউ ইয়র্কের বাফেলোর ফেডারেল আদালতে উপস্থাপন করার কথা রয়েছে।
কানাডা-যুক্তরাষ্ট্র সীমান্তে ‘পিস ব্রিজ’ থেকে যুক্তরাষ্ট্র পুলিশ রবিবার (২০ সেপ্টেম্বর) ওই নারীকে গ্রেপ্তার করে। আনুষ্ঠানিকভাবে তার পরিচয় এখনও জানানো হয়নি।
গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঠিকানায় পাঠানো ওই খামটি হোয়াইট হাউজে পৌঁছানোর আগেই চিঠিপত্র যাচাই-বাছাই কেন্দ্রে সেটি জব্দ করা হয়। খামের ভেতর মারাত্মক বিষাক্ত রাইসিন পাওয়া গেছে।
প্রকৃতিভাবে ভেরেণ্ডার বীজে রাইসিন পাওয়া যায়। ট্রাম্পের ঠিকানায় খামটি কানাডা থেকে পাঠানো হয়েছে বলে শুরুতেই সন্দেহ করা হয়। যার জেরে গত সোমবার (২১ সেপ্টেম্বর) কানাডা পুলিশ মন্ট্রেয়াল উপকণ্ঠে একটি অ্যাপার্টমেন্টে তল্লাশি অভিযান চালায়, যার সঙ্গে গ্রেপ্তার নারীর সম্পর্ক রয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট দুই কর্মকর্তা জানান, গ্রেপ্তার নারী কানাডা ও ফ্রান্সের দ্বৈত নাগরিক।
সন্দেহ করা হচ্ছে, ওই নারী রাইসিন ভরা মোট ছয়টি খাম ছয় ঠিকানায় পাঠিয়েছেন। পুলিশ তার কাছ থেকে বাকি পাঁচটি ঠিকানা জানতে পেরেছে। সেগুলো সাউথ টেক্সাসের প্রশাসন এবং কারাগারে ঠিকানায় পাঠানো হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র পুলিশ জানায়, তারা এখন পর্যন্ত এ ঘটনার সঙ্গে কোনও রাজনৈতিক বা সন্ত্রাসী দলের সংশ্লিষ্টতা খুঁজে পাননি। তবে তদন্ত চলছে।
ওদিকে, গত সপ্তাহে টেক্সাসের মিশন পুলিশ ডিপার্টমেন্ট সন্দেহজনক একটি খাম পাওয়ার কথা সোমবার জানিয়েছে। ডিপার্টমেন্টের এক মুখপাত্র বলেন, তারা খামটি না খুলে সেটি এফবিআই-র কাজে হস্তান্তর করেছে।
ভেরেণ্ডার বীজ প্রক্রিয়াজাত করে রাইসিন বানানো হয়। এটি এতটাই বিষাক্ত যে এর সামান্য পরিমাণ গিলে ফেললে, নিঃশ্বাসের সঙ্গে কিংবা ইঞ্জেকশনের সঙ্গে গ্রহণ করলে বমি বমি ভাব, বমি, অভ্যন্তরীন রক্তক্ষরণ এবং শেষ পর্যন্ত অঙ্গ প্রত্যঙ্গ বিকলও হয়ে যেতে পারে।এর কোনো প্রতিষেধকও নেই।
কী পরিমাণ রাইসিন শরীরে নেওয়া হয়েছে, তার উপর ভিত্তি করে ৩৬ থেকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে গ্রহীতার মৃত্যুও হতে পারে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন সেন্টার (সিডিসি)।
হোয়াইট হাউস এবং যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার ঠিকানায় রাইসিন প্যাকেট পাঠানোর ঘটনা নতুন নয়।
দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও আরও কয়েকজন কর্মকর্তাকে রাইসিনের গুড়া মেশানো চিঠি পাঠানোর দায়ে ২০১৪ সালে মিসিসিপি’র এক বাসিন্দাকে ২৫ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
চার বছর পর, ২০১৮ সালে পেন্টাগন ও হোয়াইট হাউসে বিষ মেশানো চিঠি পাঠানোর দায়ে সাবেক এক নেভি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আনা হয়েছিল।