গরীবদের হাত ধোয়া শেখাবে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল, ব্যয় ৪০ কোটি টাকা!
গরীব মানুষকে হাত ধোয়া শেখানোর উদ্যোগ নিয়েছে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর। এজন্য ব্যয় হবে ৪০ কোটি টাকা। এছাড়া পাঁচ বছরে ৯ জনের বেতন ভাতা ধরা হয়েছে তিন কোটি টাকা। থাকবে বিদেশ ভ্রমণ, তাতেও প্রয়োজন হবে পাঁচ কোটি টাকার।
এমন আয়োজন ‘গ্রামীণ পানি সরবরাহ, স্যানিটেশন এবং স্বাস্থ্যবিধি’ প্রকল্পের। প্রকল্পের এক হাজার ৮৮৩ কোটি টাকার সিংহভাগই অর্থায়ন করবে বিশ্বব্যাংক। অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, এ অনিয়মে শুধু আর্থিক নয়, সুনামেরও ক্ষতি হয়। আর পরিকল্পনামন্ত্রী মনে করেন, প্রচলিত আইনি কাঠামোর ফাঁক গলে রক্ষা পাচ্ছেন অভিযুক্তরা।
বেসরকারি সময় টেলিভিশনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাজারে ভালো মানের হাত ধোয়ার বেসিনের সর্বোচ্চ মূল্য ছয় থেকে ১২ হাজার টাকা, পানির পাম্পসহ সর্বোচ্চ খরচ ৩৫ হাজার টাকা। অথচ সাড়ে তিন ফুট লম্বা একটি স্টেশন তৈরিতে দুই লাখ টাকার বেশি অর্থের প্রস্তাব করেছে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর।
এরকম এক হাজার ৪২৫টি স্টেশন তৈরিতে খরচ হবে সাড়ে ২৮ কোটি টাকা। ডিপিপিতে আচরণ পরিবর্তন ও হাত ধোয়া শেখাতে চাওয়া হয়েছে ৪০ কোটি টাকা। আর পরামর্শকদের পেছনে ২৭ কোটি টাকা ধরা হয়েছে। নিজেদের সক্ষমতা বাড়াতে অধিদপ্তর ব্যয় করবে সাত কোটি টাকা।
এ বিষয়ে প্রকল্প পরিচালক আনোয়ার ইউসুফ বলেন, ‘প্ল্যানিং কমিশন আছে, একনেক আছে। যেটা দিলাম সেটাই তো পাস হবে না। অনেক কিছু মিলিয়েই টাকাটা।’ তবে বিদেশি অর্থায়ন হওয়ায় এমন প্রকল্পে অনিয়মে আর্থিক ক্ষতির সঙ্গে রাষ্ট্রের সম্মানও ঝুঁকিতে পড়ে বলে মত অর্থনীতিবিদদের।
বিশ্বব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, ‘নিয়ন্ত্রণে ঘাটতি থাকলে বিশ্বব্যাংক এগুলো ঠিক করে দেবে। এটা আসলে বাস্তবসম্মত না।’যদিও গত ১৯ আগস্ট অনুষ্ঠিত পিইসি প্রস্তাবনা নিয়ে আপত্তি তুলে ফেরত পাঠিয়ে সব খাতের খরচ অর্ধেকে নামাতে বলেছে পরিকল্পনা কমিশন।
এছাড়া এ ধরনের প্রকল্পে দুর্নীতি বন্ধে আইনী জটিলতার কারণে হতাশা প্রকাশ করেছেন পরিকল্পনামন্ত্রী। তিনি বলেন, বিধি-বিধান আছে। আপ্লিকেশন প্রায় হয়ই না, এড়িয়ে যায়। স্বীকার করি এগুলো সহজে হবে না। আরও সময় লাগবে।