২৪ ঘণ্টার মধ্যে সময় টিভিকে ক্ষমা চাওয়ার আহবান
প্রতারণার অভিযোগ ওঠা জেকেজির চেয়ারম্যান ডা. সাবরিনা চৌধুরীকে দুটি জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়াকে কেন্দ্র করে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমানকে জড়িয়ে প্রকাশিত সংবাদের বিষয়ে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সময় টিভিসহ সংশ্লিষ্টদের ক্ষমা চাওয়ার আহবান জানানো হয়েছে।
আজ সোমবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সুপ্রিম কোর্টে আইনজীবী সমিতি ভবনের মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ আহবান জানায় ‘ড. মিজানুর রহমান মানবাধিকার সুরক্ষা নাগরিক কমিটি’র নেতারা।
এসময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন কমিটির আহবায়ক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জাপানিজ স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. আবুল বারকাত, যুগ্ম আহবায়ক ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট এএম আমিন উদ্দিন, সদস্য সচিব ব্যারিস্টার খান মোহাম্মদ শামীম আজিজ, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজলসহ প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান গত ৮ সেপ্টেম্বর তার আইনজীবীদের মাধ্যমে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব মো. আলমগীর, বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন অনুবিভাগের টেকনিক্যাল এক্সপার্ট মো. শাহাবুদ্দিন, সময় টিভির বার্তা প্রধান তুষার আব্দুল্লাহ এবং সময় টিভির রিপোর্টার বেলায়েত হোসাইনের বিরুদ্ধে একটি আইনি নোটিশ প্রদান করেন।
নোটিশে উল্লিখিত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান কীভাবে তাদের মিথ্যা, বানোয়াট ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বক্তব্য দিয়ে ড. মিজানের ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও সামাজিক জীবনকে মহাবিপর্যয়ের মুখে ঠেলে দিয়েছেন, তার একটি বর্ণনা দেওয়া হয় এবং পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ক্ষমা প্রার্থনার আহবান জানানো হয়।
ওই আইনি নোটিশের জবাবে গত ৯ সেপ্টেম্বর নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব মো. আলমগীর তার আইনজীবীর মাধ্যমে একটি চিঠি পাঠান। চিঠিতে তিনি স্বীকার করেন যে, তার বক্তব্য কাটছাঁট করে রঙ ছড়িয়ে সম্পাদনা করে চটকদার শিরোনামে রিপোর্ট প্রচারের ফলে অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমানের মারাত্মক মর্যাদাহানি হয়েছে। এই অপকর্মের জন্য তিনি সম্পূর্ণরূপে সময় টিভিকে দায়ী করেন। নির্বাচন কমিশন সচিব তার বক্তব্য বিকৃত করে প্রচারের জন্য সময় টিভির বিরুদ্ধেও পদক্ষেপ নেওয়ার কথা ভাবছেন বলে চিঠিতে জানান।
কিন্তু ড. মিজানের আইনি নোটিশের অন্যান্য পক্ষরা এখনও পর্যন্ত কোনও প্রকার জবাব দেননি। এরই পরিপ্রেক্ষিতে সময় টিভির বার্তা প্রধান তুষার আবদুল্লাহ এবং সময় টিভির রিপোর্টার বেলায়েত হুসাইনকে রেজিস্ট্রি ডাকযোগে এবং ই-মেইলের মাধ্যমে দ্বিতীয় আইনি নোটিশ পাঠানো হয়। তাই এমতাবস্থায়, ‘ড. মিজানুর রহমান মানবাধিকার সুরক্ষা নাগরিক কমিটি’ মনে করে যে, ড. মিজানুর রহমানের মতো একজন জাতীয় ব্যক্তিত্বের এরকম মারাত্মক মর্যাদাহানির ঘটনা একটি বৃহত্তর ষড়যন্ত্র ও পরিকল্পনার অংশ৷
এরকম একটি অপপ্রচারের ফলে শুধু ব্যক্তি ড. মিজানুর রহমান নন, জাতীয়ভাবে বাংলাদেশের সব মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। সমগ্র দেশের শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষ এই ঘটনায় অত্যন্ত উদ্বিগ্ন ও ক্ষুব্ধ। ভবিষ্যতে যে দেশের আরও অনেক নাগরিককে অকারণে এভাবে হয়রানি করা হবে না, তার নিশ্চয়তা নেই। ব্যক্তিগত আইনি পদক্ষেপের পাশাপাশি একটি সামাজিক আন্দোলন গড়ে না উঠলে ভবিষ্যতে এ জাতীয় বিপর্যয়ের কবল থেকে জাতিকে রক্ষা করা সম্ভব হবেনা। আর সেক্ষেত্রে ৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধের ভিত্তি-চেতনাটিই ভূলুণ্ঠিত হবে বলেও বক্তারা শঙ্কা প্রকাশ করেন।