অনুমতি না নিয়ে সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা নয়
সরকারের অনুমতি ছাড়া জনস্বার্থ সুরক্ষায় নিয়োজিত সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা গ্রহণ করা যাবে না। সে জন্য বিদ্যমান বিধিবিধান মেনে চলার জন্য এ বিষয়ে নির্দেশনা দিয়ে মঙ্গলবার (৮ সেপ্টেম্বর) আইন ও বিচার বিভাগের সচিবকে চিঠি দিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ওয়াহিদা খানমের উপর হামলা এবং মাদারীপুরে ডিসি, ইউএনও ও এসিল্যান্ডের বিরুদ্ধে মামলা নেয়ায় নতুন করে এ চিঠির বিষয়টি সামনে এসেছে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের জেলা ম্যাজিস্ট্রেসি পরিবীক্ষণ শাখার সিনিয়র সহকারী সচিব তৌহিদ ইলাহীর স্বাক্ষরে চিঠিটি ইস্যু করা হয়। বিশেষ বাহকের মাধ্যমে আইন সচিবের দফতরে তা পৌঁছানো হয়। চিঠির অনুলিপি প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, সিনিয়র সচিব ও সচিব, বিভাগীয় কমিশনার ও ডিসিদেরকে দেয়া হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়েছে, সম্প্রতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে, জেলা প্রশাসক/জেলা ম্যাজিস্ট্রেট/কালেক্টর, ইউএনও, এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট ও সরকারি কর্মচারীরা দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে মামলার সম্মুখীন হচ্ছেন। তাদেরকে ব্যক্তিগতভাবে দায়ী করে মামলা হচ্ছে। কোনো ক্ষেত্রে সরকারের পূর্বানুমোদন গ্রহণের বাধ্যবাধকতা থাকলেও তা প্রতিপালন হচ্ছে না।
এতে আইনের ব্যত্যয় ঘটার পাশাপাশি মাঠ পর্যায়ে শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষা ও অপরাধ দমনে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। বিশেষত নদী, খাল-বিল, বন, জলাশয়সহ সরকারি সম্পত্তি ও স্বার্থরক্ষা, ক্ষতিসাধন/জবরদখল প্রতিরোধ ও উচ্ছেদ অভিযানে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হচ্ছে। অথচ সরকারি কাজ বা সিদ্ধান্তের বিষয়ে যে কেউ কর্তৃপক্ষের কাছে আপিল দায়ের কিংবা প্রতিকার চেয়ে আবেদন করতে পারেন। সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি উচ্চ আদালতের আশ্রয়ও গ্রহণ করতে পারেন।
সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানিয়েছে, মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তারা নানারকম ঝুঁকি নিয়ে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেন। তাদের প্রতিনিয়ত নানা ধরনের প্রতিপক্ষ মোকাবেলা করে কাজ করতে হয়। ভূমি দখলকারী ছাড়াও অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধেও শক্ত ব্যবস্থা নিতে হয়।
কিন্তু অনেক প্রভাবশালীর বিরুদ্ধে আইন প্রয়োগ করতে গিয়ে ডিসি, ইউএনও ও এসিল্যান্ডরা হেনস্তার শিকার হচ্ছেন। সরকারের পূর্বানুমতি ছাড়া কোথাও কোথাও কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলাও দায়ের হচ্ছে। সম্প্রতি মাদারীপুরের ডিসি ড. রহিমা খাতুন, এডিসি জাকির হোসেন বাচ্চু ও শিবচরের এসিল্যান্ড রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে মামলা আমলে নেয়া হয়। এতে প্রশাসনে ক্ষোভ-অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।
এছাড়া ইউএনও ওয়াহিদার ওপর হামলা হওয়ার পর সবাই গ্রহণযোগ্য সমাধান চেয়েছেন। মাঠ প্রশাসনে যথাযথভাবে আইনের প্রয়োগ করতে যাতে কোনো কর্মকর্তাকে হেনস্তা বা হামলার শিকার হতে না হয়, তা নিশ্চিত করার প্রশ্নে তারা এবার একাট্টা বলে জানা গেছে।