২৬ আগস্ট ২০২০, ১৪:১৭

ফের নোট অব ডিসেন্ট নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদারের

  © ফাইল ফটো

রাজনৈতিক দলসমূহের নিবন্ধন আইন-২০২০ এর বিষয়ে ভিন্নমত পোষণ করে নির্বাচন কমিশনের সভায় নোট অব ডিসেন্ট প্রদান করেছেন নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার। আজ বুধবার (২৬ আগস্ট) প্রধান নির্বাচন কমিশনার খান মো. নূরুল হুদা,  নির্বাচন কমিশনার ডক্টর মোঃ রফিকুল ইসলাম, বেগম কবিতা খানম ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শাহাদাত হোসেন চৌধুরী (অব.) বরাবর এই নোট অব ডিসেন্ট প্রেরণ করেন তিনি।

নােট অব ডিসেন্টে তিনি বলেন, বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন ‘গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২’-এর ‘চ্যাপ্টার সিক্স এ -এর বিভিন্ন আর্টিকেল কর্তন করে ‘রাজনৈতিক দলসমূহের নিবন্ধন আইন, ২০২০ প্রণয়নের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। আমি এই সিদ্ধান্তের সম্পূর্ণ বিরোধীতা করি। আরপিও বা গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২-এর অংশবিশেষ নিয়ে পৃথকভাবে আইন প্রণয়ন হটকারি সিদ্ধান্ত।

মাহবুব তালুকদার বলেন, আমি পূর্বেও বলেছি, ‘গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২’ একটি ঐতিহাসিক আইনগত দলিল, যা বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতার অনন্য স্মারক। নির্বাচন কমিশনের এই প্রস্তাব গৃহীত হলে ‘গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২’ -এর অঙ্গহানী ঘটবে, যাতে একে বিকলাঙ্গ মনে হবে।

তিনি বলেন, প্রস্তাবিত ‘রাজনৈতিক দলসমূহের নিবন্ধন আইন, ২০২০’-এর প্রারম্ভিক অংশে সংক্ষিপ্ত শিরোনাম, প্রয়োগ ও প্রবর্তন ইত্যাদি পরিবর্তন বিষয়ে আমি একমত নই। এতে সঙ্গা পরিবর্তন করে নতুন যে পদ-পদবি প্রস্তাব করা হয়েছে, তা আমার কাছে অনাবশ্যক মনে হয়।

তিনি আরো বলেন, রাজনৈতিক দলসমূহ ও সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে প্রাপ্ত যে ৫০টি মতামত পাওয়া গেছে, তাতে এসব পদ পদবি পরিবর্তনের বিষয়ে বিতর্ক রয়েছে। কি কারণে বা কোন যুক্তিতে এই পরিবর্তন প্রয়োজন, তা আমার বোধগম্য নয়। তবে প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে ‘আরপিও, ৭২’ -এর সংশোধন করা যেতে পারে, যা পূর্বেও করা হয়েছে।

এই নির্বাচন কমিশনার আরো বলেন, আইনের পরিবর্তন আইন কমিশনের কাছে ন্যস্ত থাকাই সমীচীন। প্রসঙ্গত উল্লেখয়োগ্য যে, আজকের সভার কার্যপত্রে বলা হয়েছে, নির্বাচন কমিশনের ৬৩তম সভার সিদ্ধান্তের আলোকে ‘রাজনৈতিক দলসমূহের নিবন্ধন আইন, ২০২০’ এর খসড়া প্রস্তুত করা হয়। এই আইন সম্পর্কে প্রাথমিক আলোচনায় নির্বাচন কমিশনে নানারুপ মতদ্বৈততা ছিল।

তিনি বলেন, আইনটি মতামত যাচাইয়ের পূর্বে অধিকতর যাচাই-বাছাই ও এর প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে নির্বাচন কমিশনে আরও আলোচনার প্রয়োজন ছিল। দেশের অন্যতম বৃহৎ দু’টি রাজনৈতিক দলসহ অন্যান্য দলও এই আইন প্রণয়নের বিরোধীতা করেছে। বর্ণিত অবস্থায়, ‘রাজনৈতিক দলসমূহের নিবন্ধন আইন, ২০২০’ সম্পর্কে ভিন্নমত পোষণ করে তিনি ‘নোট অব ডিসেন্ট’ প্রদান করেন।