ভ্যাকসিন পাওয়ার ক্ষেত্রে আমরা পিছিয়ে গেলাম: অধ্যাপক নজরুল
করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন পাওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ পিছিয়ে পড়ছে বলে মন্তব্য করেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) সাবেক উপাচার্য ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের করোনাবিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির অন্যতম সদস্য অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম।
আজ বৃহস্পতিবার দেশের একটি জাতীয় দৈনিককে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ভ্যাকসিন পাওয়ার ক্ষেত্রে আমরা পিছিয়ে গেলাম। গত ২২ মে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের জন্য ১০টা ভ্যাকসিনকে অনুমোদন দিয়েছে। এর মধ্যে অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন ছিল, যুক্তরাষ্ট্রের মর্ডানার ভ্যাকসিন ছিল এবং সিনোভ্যাকের এই ভ্যাকসিনটিও ছিল।
অধ্যাপক ডা. নজরুল বলেন, তার মানে ডব্লিউএইচও এই ভ্যাকসিনটা সম্পর্কে জানে। তাহলে এটাতো ভালো ও ক্লাসিফাইড ভ্যাকসিন বলে বোঝা যায়। এখন এই ভ্যাকসিনটার তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালের জন্য আইসিডিডিআরবিও প্রপোজাল তৈরি করে বিএমআরসিকে দিয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী এর জন্য বিএমআরসির অনুমোদন লাগে এবং বিএমআরসি সেই অনুমোদন দিয়েছে।
বিএসএমএমইউ সাবেক উপাচার্য জানান, এখন এটা শুরু করার আগে তো ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের অনুমোদন লাগে, যেহেতু এটা বিদেশি ভ্যাকসিন। তাই সেটার জন্যই ফাইলটা সেখানে গিয়েছিল। এখন এটা সচিব মহোদয়ের কাছে গেছে কি না, মানে এখন তিনিই এটা যাচাই-বাছাই করছেন।
এর আগে চীনা কোম্পানি সিনোভ্যাকের তৈরি করা ভ্যাকসিনের তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল বাংলাদেশে করার অনুমোদন দিয়েছে বাংলাদেশ মেডিকেল রিসার্চ কাউন্সিল (বিএমআরসি)। এরপর প্রায় এক মাস পার হলেও এ বিষয়ে উল্লেখযোগ্য কোনো অগ্রগতি পরিলক্ষিত হয়নি।
এদিকে গতকাল বুধবার স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক জানিয়েছেন, চীনের কাছ থেকে করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন কেনা ও বাংলাদেশে পরীক্ষামূলক প্রয়োগ করতে দেওয়া হবে কি না, সে বিষয়ে আগামী সপ্তাহে সিদ্ধান্ত হবে।
অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, সিনোভ্যাকের ভ্যাকসিনটার ট্রায়াল ব্রাজিলে শুরু হয়েছে কিংবা হবে বলে শুনেছি। বাংলাদেশে ট্রায়ালের এই অবস্থা। এখন আমরা তো গরিব দেশ। দাতব্য সংস্থা গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ভ্যাকসিনস অ্যান্ড ইমুনাইজেশন (গ্যাভি) যেটা আছে, তারা বিভিন্ন সংস্থা থেকে ডোনেশন পায়।
তিনি বলেন, তারা বিনামূল্যে বা স্বল্প মূল্যে ভ্যাকসিন সংগ্রহ করে অনুন্নত দেশগুলোকে সরবরাহ করে। আমাদেরকেও অনেক ভ্যাকসিন গ্যাভি দিয়ে থাকে। তাদের থেকেও আমরা ভ্যাকসিন পাব। এখানে বিষয়টা হচ্ছে, যারা কিনে নেবে, তারা তো আগে নেবে। পরে বাঁচলে তারপর গ্যাভি পাবে।
দেশের করণীয় সম্পর্কে অধ্যাপক নজরুল জানান, এখন আমাদের উচিত কালক্ষেপণ না করে দ্রুত ভ্যাকসিনটা ট্রায়ালের ব্যবস্থা করে ভ্যাকসিন প্রাপ্তির একটা সম্ভাবনা তৈরি করা। বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং বলেছেন, বাংলাদেশে ভ্যাকসিনটার ট্রায়াল হলে তিনি প্রথম স্বেচ্ছাসেবক হবেন। এতে বোঝা যায়, তাদের কতটা উৎসাহ।