২ মাস যাবৎ পানিবন্দী, আমাদের কোনো ঈদ নেই
আগামীকাল শনিবার ঈদুল আজহা উপলক্ষে মোটামুটি দেশজুড়ে বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ। তবে এই উৎসব স্পর্শ করেনি খুলনার কয়রার উত্তর বেদকাশী ইউনিয়নের তিন গ্রামের অধিবাসীদের। আম্পানের আঘাতে বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর থেকে প্রায় দুইমাস যাবৎ এই পানিবন্দী অবস্থায় দিন কাটছে এসকল গ্রামের বাসিন্দাদের।
কাটমারচর গ্রামের অধিবাসী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ইমরান হোসেন দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আম্পান আঘাত হানার পর থেকে দুই মাস যাবৎ আমরা পানিবন্দী। গ্রামের বেশিরভাগ মানুষ ঘর-বাড়ি ছেড়ে রাস্তার ওপর ছোটো টং তৈরি করে বসবাস করতে বাধ্য হচ্ছে। এই অবস্থায় আমাদের মধ্যে কোনো ঈদের আমেজ নেই। এমনকি আমরা এটাও জানিনা, কাল কোথায় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে।
এর আগে ঈদুল ফিতরের নামাজ তারা পানির মধ্যেই আদায় করেছিলেন বলে জানান ইমরান হোসেন।
একই গ্রামের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এনামুল কবির বলেন, “দুইমাস যাবৎ পানিবন্দী, তাই আমাদের মাঝে কোনো ঈদের আনন্দ নেই। যেখানে সবসময় জোয়ারের পানিবৃদ্ধির আশঙ্কায় থাকতে হয় সেখানে ঈদ উদযাপনের আসলে কোনো সুযোগই নেই।”
এই শিক্ষার্থী জানান, পুরো গ্রামজুড়েই এবার ঈদে কোনো আনন্দ বা উৎসব নেই। এসময় তিনি সরকারের নিকট দ্রুত বাঁধ নির্মাণ করে তাদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে দেয়ার আবেদন জানান।
এছাড়া, অনেকটা একই অবস্থার কথা উল্লেখ করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তরিকুল ইসলাম বলেন, “আম্পানে প্লাবিত হওয়ার আজ ৭৩ দিন পূর্ণ হলো কিন্তু এখনও খুলনা জেলার কয়রা উপজেলার উত্তর বেদকাশী ইউনিয়নের তিন গ্রাম ও মহারাজপুর ইউনিয়নের কিছু অংশ প্লাবিত। এমনকি আগামীকাল ঈদের নামাজ আদায় ও পশু কুরবানি করার সামান্য জায়গাটুকুও নেই।”
বশেমুরবিপ্রবির এই শিক্ষার্থী বলেন, “এলাকার মানুষের প্রধান উপার্জন বাগদা চাষ কিন্তু প্রায় সবার ঘেরই পানিতে ভেসে গেছে। তাই শত শত ঘের মালিক এখন অর্থনৈতিক দুর্দশায় ভুগছে। সবমিলিয়ে এই দুর্যোগ ২০০৯ সালের আইলার থেকেও ভয়ংকর।”
প্রসঙ্গত, গত ২০ মার্চ বাংলাদেশে আঘাত হানে ঘূর্ণিঝড় আম্পান। এই ঘূর্ণিঝড়ের কারণে দেশের ২৬ জেলায় প্রায় এক হাজার ১০০ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।