আইনজীবীদেরকে রায়হানের সঙ্গে দেখা করতে দেয়নি মালয়েশিয়া
করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে শ্রমিক দুর্দশা নিয়ে আলজাজিরায় সাক্ষাৎকার দিয়ে মালয়েশিয়ায় গ্রেপ্তার বাংলাদেশি তরুণ রায়হান কবিরের সঙ্গে তার আইনজীবীদের দেখা করতে দেয়নি দেশটির ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ।
পূর্ব নির্ধারিত সময় অনুযায়ী আজ সোমবার দুপুর ২টায় আইনজীবীরা মালয়েশিয়ান ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষের কাছে গিয়ে রায়হানের সঙ্গে দেখা করতে চান। তখন তাদের জানানো হয়, ‘পরে তারা দেখা করার জন্য তারিখ দেবেন’।
রায়হানের আইনজীবী সুমিতা শান্তিনি কিষনা (চেম্বারস অফ সুমিতা) এবং সেলভারাজ চিন্নিয়াহ (মেসার্স সিআর সেলভা) জানান, মালয়েশিয়ান পুলিশ ও ইমিগ্রশন বিভাগকে তারা শনিবারই দেখা করার জন্য আবেদন জানিয়েছেন। সে অনুযায়ী আজকে দেখা করতে গেলে তাদের জানানো হয় যে, দেখা করা যাবে না। কবে দেখা করা যাবে জানতে চাইলে কর্তৃপক্ষ তাদের জানিয়েছে, তারা আরেকটি তারিখ দেবে।
দেখুন: বাংলাদেশি রায়হানের জন্য লড়বেন মালয়েশিয়ার ২ আইনজীবী
রায়হানের আইনজীবী সুমিতা বলেন, ‘রায়হানের পরিবার যেহেতু তাদের নিয়োগ দিয়েছে, কাজেই তারা চান হাইকমিশনের কর্মকর্তারা যেন আইনজীবী হিসেবে তাদের সঙ্গে রাখে। এ ব্যাপারে তারা বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও হাইকমিশনের সহায়তা চেয়েছেন।’
এর আগে শনিবার দেশটির ইমিগ্রেশনের মহাপরিচালক খাইরুল ডিজাইমি দাউদ এক বিবৃতিতে বলেন, ২৫ বছর বয়সী রায়হান কবিরকে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়েছে, যাতে আর কখনো তিনি মালয়েশিয়ায় ফিরতে না পারেন।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশি প্রবাসীদের সঙ্গে মালয়েশিয়ার পুলিশ দুর্ব্যবহার করছে, এমন অভিযোগ করে আলজাজিরা টেলিভিশনে সাক্ষাৎকার দেওয়ায় রায়হান কবিরের বিরুদ্ধে এসব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে’।
এ বিবৃতির পরেই রায়হান কবিরকে ১৪ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে মালয়েশিয়ার ইমিগ্রেশন বিভাগ। দেশটি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আমির হামজা জয়নুদ্দিন সাংবাদিকদের জানান, তদন্তের সার্থেই রায়হানকে ১৪ দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়েছে।
জানা গেছে, গত ৩ জুলাই আল জাজিরার ইংরেজি অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে ‘লকডআপ ইন মালয়েশিয়ান লকডাউন-১০১ ইস্ট’ শীর্ষক একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদনে মালয়েশিয়ায় থাকা প্রবাসী শ্রমিকদের প্রতি লকডাউন চলাকালে দেশটির সরকারের নিপীড়নমূলক আচরণ উঠে আসে। প্রতিবেদনে দেখা যায়, রায়হান কবির নামের এক বাংলাদেশি এই নিপীড়নের প্রতিবাদ করেছেন।
প্রসঙ্গত, ৩ জুলাই তার বিরুদ্ধে মামলা করে মালয়েশিয়ান সরকার। পরে ৭ জুলাই তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয় এবং ১৫ জুলাই বাতিল করা তার ভিসা। এরপর গত শুক্রবার কুয়ালালামপুরের একটি কনডোমিনিয়ামে থেকে রায়হান কবিরকে গ্রেপ্তার করা হয়।