করোনা প্রমাণ করেছে আমরা কতটা শক্তিহীন: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) মহামারি আমাদের দেখিয়েছে সংক্রামক রোগ কোনো সীমান্ত চিনে না। এ ভাইরাস দুর্বল, ক্ষমতাধর কিংবা উন্নত, উন্নয়নশীল কাউকে আলাদা বিবেচনা করে না। এটা প্রমাণ করেছে কোনো বৈশ্বিক দুর্যোগ মোকাবেলায় আমরা সত্যিকার অর্থে কতটা শক্তিহীন।
আজ বৃহস্পতিবার (৪ জুন) লন্ডনে স্থানীয় সময় দুপুরে (বাংলাদেশ সময় রাত) ভার্চুয়াল প্লাটফর্মে গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ভ্যাকসিন অ্যান্ড ইমিউনাইজেশন (গাভি) আয়োজিত গ্লোবাল ভ্যাকসিন সামিটে দেয়া বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। বিভিন্ন দেশের সরকার, ফাউন্ডেশন, বেসরকারি খাত ও সুশীল সমাজের নেতাদের নিয়ে বিশ্ব টিকা সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
করোনাভাইরাসের মহামারি থেকে রক্ষা করতে দ্রুত টিকা উদ্ভাবনের আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, টিকাদানই সংক্রামক বা ছোঁয়াচে রোগ মোকাবেলার অন্যতম উপায় হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে। জাতিসংঘের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, প্রতি চার মাসে মানুষের মধ্যে একটি নতুন সংক্রামক রোগ দেখা দেয়। আর গ্লোবাল ভিরোম প্রজেক্টের অনুমিত হিসাব মতে প্রায় সাত লাখ ভাইরাস রয়েছে যেগুলো মহামারি ঘটাতে পারে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই ভাইরাসের অনেকগুলো মানবজাতির অস্তিত্বের জন্য হুমকির সৃষ্টি করতে পারে। তাই মানবজাতির টিকে থাকার জন্য বিদ্যমান ও আরও নতুন টিকার প্রয়োজন হবে। এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী জিএভিআই অ্যালায়েন্স (সাবেক গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ভ্যাকসিনেশন অ্যান্ড ইমিউনাইজেশন)-এর সহায়তা কামনা করেন। তিনি বলেন, এই লড়াইয়ে জিএভিআই অ্যালায়েন্স আমাদের সর্বোত্তম সহায়তা দিতে পারে এবং আমরা তাদের করতে দিলে ভবিষ্যতেও তারা তা দেয়া অব্যাহত রাখবে।
শেখ হাসিনা বলেন, প্রতিষ্ঠার পর থেকে জিএভিআই সারাবিশ্বে ৭৬ কোটির বেশি মানুষকে মারাত্মক রোগের টিকা দিয়েছে এবং এক কোটির বেশি মানুষের জীবন বাঁচিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কেবল আমাদের সদিচ্ছাই জিএভিআই’র পূর্ণ তহবিল ও তাদের টিকাদান অবকাঠামো জোরদার নিশ্চিত করতে পারে এবং অতিরিক্ত ৩০ কোটি শিশুকে টিকাদান ও জিএভিআই সহায়তাপুষ্ট দেশগুলোর ৮০ লাখ পর্যন্ত মানুষের জীবন বাঁচাতে পারে। তাই কেবল আমি নই, সারা দুনিয়া জিএভিআই’র সহায়তায় আপনাদের বক্তব্য শুনতে অপেক্ষা করছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্ব যখন কোভিড-১৯ মোকাবেলায় মরিয়া হয়ে একটি কার্যকর টিকা খুঁজছে তেমন সময় টিকা বিষয়ক সহায়তায় মিলিত হওয়ার চেয়ে উত্তম সময় আর হতে পারে না। তিনি বলেন, ‘লাখ লাখ শিশু ও গর্ভবতী মায়ের জীবন বাঁচিয়েছে এমন একটি উদ্যোগের একজন অংশীদার হিসেবে আমি আপনাদের সঙ্গে থাকতে পেরে আনন্দিত।
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের সভাপতিত্বে ভার্চুয়াল গ্লোবাল ভ্যাকসিন সম্মেলনে জাতিসংঘ মহাসচিব ও জিএভিআই প্রধান ড. এনগোজি ওকনজো-আইওয়ালাও বক্তব্য দেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভিডিও বার্তাও শোনানো হয়।