আম্ফানে উড়ে যাবে করোনাভাইরাস, কী বলছেন বিজ্ঞানীরা?
করোনা দাপট কমছে না। যদিও মানুষ আর লকডাউন মানতে রাজি নয়, তারা সুখবর চায়। এই সুখবর দেশ কিংবা বিদেশ- যেখানে যেভাবেই পাওয়া যাক না কেন। করোনার এই দাপটের মধ্যেই হানা দিয়েছে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ‘আম্ফান’। যেটাকে ভয়ের পাশাপাশি আশার হাতিয়ারও বানিয়ে ফেলেছে সামাজিকযোগমাধ্যম। হয়তো সেই ‘আশা খোঁজা’র তাগিদ থেকেই।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একজ লিখেছেন, ‘ঝড়-বৃষ্টিতে ভাইরাস মাটিতে মিশে যায়, আশা করছি আম্পান কিছুটা হলেও সুখবর দেবে’। যার নিচে পজেটিভ-নেগেটিভ নানা মন্তব্য এসেছে।
কিন্তু আসলেই কি কোভিড-১৯ ঝড় আম্ফানে উড়ে যাবে? নাকি নতুন উদ্যোমে আরও বেশি শক্তিশালী হবে? ভারতের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর বায়ো মেডিক্যাল জেনোমেটিক্স-এর অধিকর্তা বিজ্ঞানী পার্থপ্রতিম মজুমদার মনে করেন, ‘কোভিড-১৯ ভাইরাসের সঙ্গে ঘূর্ণিঝড়ের সরাসরি সম্পর্কের বিজ্ঞানসম্মত প্রমাণ নেই। কারন করোনা সম্পূর্ণ নতুন ভাইরাস। তাই ঝড়-বৃষ্টিতে এর দাপট কমার সম্ভাবনা আপাতত নেই।’ তিনি আরো বলেন, কোভিড-১৯ ভাইরাসটি মারাত্মক ছোঁয়াচে। হাঁচি, কাশির বা কথা বলার সময় একজনের থেকে অন্যের শরীরে চলে যাওয়ার ঝুঁকি খুব বেশি। তাই ঘূর্ণিঝড়ের সময় আশ্রয়কেন্দ্রে একসঙ্গে অনেকের থাকাও নিরাপদ নয়।
প্রায় একই কথা বলছেন গবেষক ইন্দ্রনীল বন্দ্যোপাধ্যায়। তার মতে, কোভিড-১৯ ভাইরাস ড্রপলেট ইনফেকশনের মাধ্যমে ছড়ায়। তাই মানুষে মানুষে দূরত্ব বজায় রেখে এবং সাধারণ স্বাস্থ্যবিধি মেনে না চললে রোগ ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি থেকেই যায়। ঝড়বৃষ্টি হলেই যে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাবে তা নয়। কিন্তু এই সময় শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা ও ভিড় এড়িয়ে চলার নিয়ম মানতেই হবে। ঝড়ের জন্য অনেক মানুষকে নির্দিষ্ট জায়গায় সরিয়ে আনা হলে উদ্ধারকারীদের এই ব্যাপারটার উপর গুরুত্ব দিতে হবে।
তিনি আরো বলেন, ঝড়বৃষ্টি বা কোনও প্রাকৃতিক দুর্যোগ হলে করোনার সংক্রমণ ক্ষমতা কমবে না। তাই দুর্যোগের মোকাবিলা করার সময় কোভিড-১৯-এর অতিমারির কথা মাথায় রেখেই করা উচিত। ঘূর্ণিঝড় উদ্ধারকেন্দ্রে প্রত্যেককে যথাযথ মাস্ক পরে থাকতে হবে। অসুস্থ মানুষদের জন্য আলাদা ব্যবস্থা রাখা উচিত। তা না হলে করোনার প্রকোপ আরও বাড়ার শঙ্কা থেকেই যাবে।