গরীবদের টাকা ছাড়াই চিকিৎসা দিতেন ডা. মঈন
গরীব ও অসহায়দের চিকিৎসা দিতে কোন টাকা নিতেন না করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিনের সহকারী অধ্যাপক ডা. মঈন উদ্দীন। অসহায়দের কাছে মানবিক ডাক্তার হিসেবেই পরিচিত ছিলেন তিনি।
ডা. মঈন উদ্দীনের বাড়ি সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার ধারনে। পরিবারসহ সিলেটের হাউজিং স্টেটে থাকতেন তিনি। ঢাকা মেডিকেলের মেধাবি ছাত্র ড. মঈন করোনা যুদ্ধে প্রথম সারির যোদ্ধা ছিলেন। দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে করোনায় আক্রান্ত হন তিনি। গত ৫ এপ্রিল তার করোনা পজিটিভ আসে।
আক্রান্ত হওয়ার পর থেকেই তার পরিবারসহ পুরো হাউজিং এস্টেট এলাকা লকডাউন ঘোষণা করা হয়। অবস্থার অবনতি ঘটলে ৭ এপ্রিল ডা. মঈনকে নগরীর শহীদ শামসুদ্দিন হাসপাতালে করোনা ইউনিটে আইসোলেশনে নেওয়া হয়। সেখান থেকে পরবর্তীতে পরিবারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাকে এ্যম্বুলেন্সযোগে দ্রুত ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়। গত তিন দিন তাকে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছিল। রেসপিরেটরি ফেইলিওরের কারণে আজ তার মৃত্যু হয়।
ডা. মঈনের বয়স ছিল ৫০ এর কাছাকাছি। আজ বুধবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয় বলে হাসপাতালের উপ-পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এবিএম বেলায়েত হোসেন জানিয়েছেন।
গত সপ্তাহে সিলেট থেকে ঐ চিকিৎসককে ঢাকায় নিয়ে আসার খবরে ব্যাপক আলোচনা তৈরি হয় গণমাধ্যম ও সোশ্যাল মিডিয়ায়।
ওসমানী মেডিকেলের ওই চিকিৎসকই সিলেটে শনাক্ত হওয়া প্রথম কোভিড-১৯ রোগী। কীভাবে তিনি সংক্রমিত হলেন, সে বিষয়ে কোনো তথ্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তর প্রকাশ করেনি। মেডিসিন ও হৃদরোগের চিকিৎসক ওই সহকারী অধ্যাপক সিলেটের ইবনে সিনা হাসপাতালেও নিয়মিত রোগী দেখতেন।
এদিকে মঈন উদ্দীনের পরিবারের সব দায়িত্ব সরকার নেবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বুধবার (১৫ এপ্রিল) ভিডিও কনফারেন্স করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় জরুরি অনুদান গ্রহণের সময় এ কথা বলেছেন তিনি।