০৪ এপ্রিল ২০২০, ২০:১৩

৪৫ পরিবারের ভাড়া মওকুফ করেছেন বাড়িওয়ালা

বাড়ির মালিক ব্যবসায়ী হাজী মোহাম্মদ হোসেন  © সংগৃহীত

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস আতঙ্কে সারাদেশে চলছে অঘোষিত লকডাউন। ফলে অনেক খেটে খাওয়া মানুষ হয়ে পড়েছেন বেকার। অনেকের ঘরেই দেখা দিয়েছে খাদ্য সংকট। এমন পরিস্থিতিতে সীতাকুণ্ডের এক বাড়িওয়ালা বাড়ি ভাড়া না নেওয়ার ঘোষণা দিয়ে মানবিকতার নজির সৃষ্টি করছেন। এ ঘোষণায় স্থানীয় লোকদের প্রশংসায়ও ভাসছেন তিনি।

সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারী ইউনিয়নের অক্সিজেন রোড এলাকার ব্যবসায়ী হাজী মোহাম্মদ হোসেন (সাবেক মেম্বার) ও সীতাকুণ্ড উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আমজাদ হোসেন বাবলুর পিতা নিজের দুইটি ভবনের ৪৫ পরিবারের চলতি মাসের ভাড়া মওকুফ করছেন।

এ বিষয়ে বাড়ির মালিক হাজী মো. হোসেন মুঠোফোনে বলেন, ভাটিয়ারী ও মাদামবিবিরহাট এলাকায় দুইটি ভাড়া বাসায় ৪৫টি ঘর থেকে প্রতিমাসে ভাড়া উঠে ১ লক্ষ ৫৮ হাজার টাকা। ভাড়াটিয়ারা প্রত্যেকেই সীতাকুণ্ডের বিভিন্ন কারখানায় শ্রমিকের কাজ করে। অঘোষিত লকডাউনের ফলে সব বন্ধ তাই আয়ও বন্ধ। এমন পরিস্থিতিতে তাদের চলতি মাসের ভাড়া লাগবে না বলে আমি তাদের জানিয়ে দিয়েছি।

তিনি বলেন, ৪৫ পরিবারের মধ্যে কিছু পরিবার দৈনিক আয়ের ওপর নির্ভরশীল। ভাড়া মওকুফ ছাড়াও আমি এলাকার গরীব, অসহায়দের জন্য চেষ্টা করি সাহায্য-সহযোগীতা করতে। সব পরিবারগুলোকে বলে দেওয়া হয়েছে তারা যেন নিজ নিজ ঘরে অবস্থান করে। যতদিন সরকারি নির্দেশনা থাকবে ততদিন যেন তারা কেউ অযথা বা কাজের খোঁজে বাইরে না যায়।

সীতাকুণ্ড উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আমজাদ হোসেন বাবলু জানান, দেশের এ ক্রান্তিলগ্নে তার বাবার মতো বাড়িওয়ালাদের অসহায় ভাড়াটিয়াদের পাশে দাঁড়ানো উচিৎ। ভাড়াটিয়ারা যেন নিরাপদে ঘরে থাকে তাই এসব ব্যবস্থা করে দিয়েছেন তার বাবা। ৪৫টি পরিবার তাদের সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারী ও মাদামবিবিরহাটের দু’টি জায়গাতে ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করছেন।

হাজী মো. হোসেনের ভাড়া বাড়িতে থাকেন দিনমজুর আবুল কাশেম। তিনি স্বস্তি প্রকাশ করে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আমরা ভয় এবং খুব সংকটময় মূহুর্ত অতিক্রম করছি। অনেকদিন হলো কাজ করা হয় না। খুব চিন্তিত ছিলাম নিজের পরিবারের ভরন-পোষন নিয়েই। তারপরে বাড়ি ভাড়ার মতো একটা চাপ তো ছিলই। যখন শুনলাম বাড়িওয়ালা আমাদের থেকে ভাড়া নিবেন না তখন একটু চাপ মুক্ত হয়েছি। অনেক বেশি ভালো লাগছে।