পিপিই অজুহাতে কাছে আসলো না ডাক্তার, মারা গেল রোগী
দীর্ঘ ২০ বছর ধরে অ্যাজমায় ভুগছিলেন তিনি। গত শনিবার সকালে মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে নেয়া হয় জেলা সদরের সরকারি হাসপাতালে। তবে করোনা সন্দেহ হওয়ায় সেখানে চিকিৎসা দিতে রাজি হয়নি কর্তব্যরত ডাক্তার। তাকে রেফার করা হয় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। ময়মনসিংহ নেয়ার পথে রোগীর অবস্থা আরো খারাপ হতে থাকে। সেখানে রোগীর সাথে থাকা আত্মীয়রা তাকে আইসিইউতে ভর্তির কথা বললেও ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী (পিপিই) নেই অজুহাতে সিট মেলেনি আইসিইউতে। ওইদিন রাত ৯ টায় মারা যান তিনি। এটি জামালপুরের শাহবাজপুর এলাকার আব্দুল কুদ্দুসের (৭০) ঘটনা।
রোগীর স্বজনদের অভিযোগ, হাসপাতালের আইসিইউতে সিট ফাঁকা থাকলেও শুধুমাত্র পিপিই নেই অজুহাতে তাকে আইসিইউতে রাখা হয়নি। এছাড়া হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও করোনা সন্দেহে তার চিকিৎসাও ঠিকমেতা করেননি চিকিৎসকরা। ডাক্তারদের অবহেলায় আব্দুল কুদ্দুস মারা গেছেন।
এ বিষয়ে আব্দুল কুদ্দুসের ভাতিজি লায়লা বুশরাত দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে জানান, শনিবার সকালে হঠাৎ করেই ফুপা খুব অসুস্থ হয়ে পড়েন। আমরা তাকে জামালপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে যাই। তবে সেখানে করোনা সন্দেহে তাকে ভর্তি নেয়নি। ফুপার পরিবারের কেউ বিদেশে থাকেন না। তিনিও সম্প্রতি বিদেশে যাননি। বাড়ির আশেপাশেও কেউ বিদেশ ফেরত নয়। এসব কিছু বলার পরেও তাকে ভর্তি নেো হয়নি।
তিনি বলেন, ফুপাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়। হাসপাতালে তাকে ভর্তি নেয়া হলেও কোন বেড দেয়া হয়নি। অনেক বেড খালি পরে থাকলেও ফুপার বেডে জায়গা হয়নি। সন্ধ্যা থেকে আমরা সবাই হাসপাতালে, একবার কোন ডাক্তার, নার্স, ওয়ার্ড বয় কেউ আসে নাই। ফুপাকে তারা ওয়ার্ডে রাখবেন না, তাই বার বার বলেছে আইসিইউতে নিয়ে যান। এদিকে আইসিইউতে সিট খালি নাই। অথচ আমাদের মানা করার ১ ঘন্টা পরেই আইসিইউতে রোগী ভর্তি নিয়েছেন তারা।
তিনি আরও বলেন, হাসপাতালের আইসিউতে ফুপাকে ভর্তি নিতে আমরা অনেকবার অনুরোধ করেছি। তবে তারা আমাদের অনুরোধ শোনেননি। আইসিইউর দায়িত্বরত চিকিৎসক আমাদের বলেন, রোগী করোনা ভাইারাসে আক্রান্ত হতে পারেন। আর তাদের কাছে পিপিই নেই। কোন সেফটি প্রোটেকশনও নেই। তাই তারা রিস্ক নিতে পারবেন না। শেষে শনিবার রাতেই বিনা চিকিৎসায় ফুপা মারা যান। রবিবার সকালে ফুপাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।