গন্ধ নেয়ার অনুভূতি হারানোসহ আরো ২ লক্ষণ করোনা আক্রান্তদের
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস এখন সারা বিশ্বে মহামারির আকার ধারণ করেছে। এই ভাইরাসে আক্রান্ত হলে রেসপিরেটরিতে সমস্যা হয়। জ্বর, কাশি, শ্বাস প্রশ্বাসের সমস্যাই মূলত প্রধান লক্ষণ। এটি ফুসফুসে আক্রমণ করে। সাধারণত শুষ্ক কাশি ও জ্বরের মাধ্যমেই শুরু হয় উপসর্গ দেখা দেয়, পরে শ্বাস প্রশ্বাসে সমস্যা দেখা দেয়। সাধারণত রোগের উপসর্গগুলো প্রকাশ পেতে গড়ে পাঁচদিন সময় নেয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, ভাইরাসটির ইনকিউবেশন পিরিয়ড ১৪দিন পর্যন্ত স্থায়ী থাকে। তবে কিছু কিছু গবেষকের মতে এর স্থায়িত্ব ২৪দিন পর্যন্ত থাকতে পারে। মানুষের মধ্যে যখন ভাইরাসের উপসর্গ দেখা দেবে তখন বেশি মানুষকে সংক্রমণের সম্ভাবনা থাকবে তাদের। তবে এমন ধারণাও করা হচ্ছে যে নিজেরা অসুস্থ না থাকার সময়ও সুস্থ মানুষের দেহে ভাইরাস সংক্রমিত করতে পারে মানুষ। শুরুর দিকের উপসর্গ সাধারণ সর্দি-জ্বর এবং ফ্লুয়ের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ হওয়ায় রোগ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে দ্বিধাগ্রস্থ হওয়া স্বাভাবিক।
বিশ্বব্যাপী করোনা আক্রান্তদের উচ্চ মাত্রার জ্বর, একনাগাড়ে কাশি, গলাব্যথা হচ্ছে। তবে এবার করোনার নতুন কয়েকটি লক্ষণের কথা বলা হচ্ছে। তাদের মধ্যে অন্যতম হলো ডায়রিয়া, প্রচুর বমি আর গন্ধ নেওয়ার অনুভূতি হারিয়ে যাওয়া। ব্রিটেনের নাক, কান ও গলা বিশেষজ্ঞদের দাবি, করোনা আক্রান্তদের গন্ধ নেওয়ার অনুভূতি হারিয়ে যাচ্ছে। যাদের এ ধরনের অনুভূতি হচ্ছে, তাদেরকে সেল্ফ আইসোলেশনে থাকার কথা বলেছেন ডাক্তাররা।
চীনের হুবেই প্রদেশের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়া ২০৪ জন রোগীকে নিয়ে করা আরো একটি গবেষণায় বলা হয়, শতকারা ৫০ শতাংশ রোগীই গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সমস্যায় ভুগছিলেন। যারা পেটের বা গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সমস্যা ভুগছিলেন তাদের মধ্যে ৭৯ শতাংশ ক্ষুধামন্দা ভুগতেন, ৩৪ শতাংশ ডায়রিয়ায় ভুগতেন, ৪ শতাংশ বমি করতেন আর ২ শতাংশ পেটে ব্যথায় ভুগতেন।
ভারতের ট্রান্সলেশনাল হেলথ সাইন্স অ্যান্ড টেকনোলজি ইনস্টিটিউটের পরিচালক ড. গগনদীপ কাং বলেছেন, আপনার যদি এসব লক্ষণ দেখা দেয় তাহলে দ্রুত করোনা টেস্ট করানো ভালো। এরকম লক্ষণ দেখা দিলে সেল্ফ আইসোলেশনেও থাকার কথা বলেছেন তিনি। গগনদীপ বলেছেন, যতি এসব লক্ষণগুলো আরো বেশি রোগীর শরীরের দেখা দেয় তাহলে বিজ্ঞানীরা হয়তো আরো বেশি গবেষণা করবেন।
চীনের উহানের চিকিৎসকদের দাবি, করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তির গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সমস্যাও হতে পারে। উহানের হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়া ১৯১ জন রোগীর ওপর গবেষণা করে তারা জানিয়েছেন, পাঁচ শতাংশ রোগীর ডায়রিয়া, আর চার শতাংশ রোগীর মধ্যে দেখা যায় বমি বমি ভাব।