বেওয়ারিশ লাশ দাফনের পর জানা গেল তিনি পুলিশ
গাজীপুরে ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানের সামনে থেকে গত ৪ মার্চ উদ্ধার হওয়া পরিচয়হীন গলাকাটা লাশের পরিচয় পেয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। রাস্তার পাশে পড়ে থাকা গলাকাটা মরদেহ বেওয়ারিশ হিসেবে দাফনের এক সপ্তাহ পর মিলল তার পরিচয়। বৃহস্পতিবার (১২ মার্চ) ওই পুলিশ সদস্যের মরদেহ উত্তোলন করে পারিবারিক কবরস্থানে দাফনের জন্য আদালতে আবেদন করেছেন পুলিশ ও স্বজনরা।
দুপুরে গাজীপুরের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শরিফুল ইসলাম শুনানি শেষে মরদেহ উত্তোলনের অনুমতি দেন বলে জানান কোর্ট পরিদর্শক (মেট্রো) আতিকুর রহমান। নিহত মো. শরীফ আহাম্মেদ (৩৩) ময়মনসিংহের ত্রিশাল থানার ঝিলকি এলাকার মো. আলাউদ্দিন ফকিরের ছেলে।
তিনি গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) ট্রাফিক দক্ষিণ বিভাগে প্রায় ৬ মাস কর্মরত (কনস্টেল নম্বর ৬২৩) ছিলেন। গত ৪ মার্চ দুপুরে গাজীপুর নগরীর ন্যাশনাল পার্কের সামনে থেকে তার গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এরপর ময়নাতদন্ত ও ফিঙ্গার প্রিন্ট নিয়েও তার পরিচয় শনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ। পরে গত ৮ মার্চ গাজীপুর সিটি করপোরেশনের পূর্ব চান্দনা কবরস্থানে বেওয়ারিশ হিসেবে তার মরদেহ দাফন করা হয়।
এদিকে, শরীফ নিখোঁজের পর তার পুলিশ কনস্টেবল বাবা গত ৯ মার্চ টঙ্গী পূর্ব থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি নম্বর ৩৭৩) করেন। জিডিতে তিনি উল্লেখ করেন ২১ দিন ছুটি কাটিয়ে গত ২ মার্চ কর্মস্থলে যোগ দেন শরীফ। সর্বশেষ ৩ মার্চ রাত ১১টা ১০ মিনিটে তার স্ত্রী ও ছেলের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন। এরপর থেকে তার কোনও হদিস নেই।
গাজীপুর সদর থানার এসআই লুৎফর রহমান বলেন, গলাকাটা মরদেহ উদ্ধারের পর পরিচয় সনাক্তের অনেক চেষ্টা করেছি। আঙুলের ছাপ নিয়েছি। কিন্তু তখন জাতীয় পরিচয়পত্রের সার্ভারে ক্রুটি থাকায় পরিচয় জানা সম্ভব হয়নি। এরপর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) চেষ্টা করে বুধবার (১১ মার্চ) নিহতের পরিচয় শনাক্ত করেছে।
নিহতের মামা আব্দুস সালাম বলেন, শরীফ একজন পুলিশ সদস্য ছিল। তাকে পুলিশের গাফিলতিতে বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, বুধবার (১১ মার্চ) রাত ১০টার দিকে পিবিআইয়ের এসআই সুমন ফোন করে মরদেহের পরিচয় শনাক্তের কথা জানিয়েছেন। এরপর আমরা ছুটে এসেছি গাজীপুরে। পুলিশের কাছে জানতে চেয়েছি কেন পরিচয় বের করতে পারল না। জবাবে তারা বলেছে, এনআইডির সার্ভারে সমস্যা ছিল।