০২ জানুয়ারি ২০২০, ১৭:০৯

কাফনের কাপড় পরে অনশনে বাবা, পাশে শিশু শিক্ষার্থীরা

শ্রমিকদের অনশনে যোগ দিলেন তাদের সন্তানরাও  © সংগৃহীত

মজুরি কমিশন বাস্তবায়ন, বকেয়া মজুরী প্রদানসহ ১১ দফা দাবিতে আমরণ অনশন অব্যাহত রেখেছে নরসিংদীর ইউএমসি জুটমিলের শ্রমিকরা। বৃহস্পতিবার (০২ জানুয়ারি) অনশনের পঞ্চম দিন সকালে শ্রমিকরা কাফনের কাপড় মাথায় বেঁধে অনশন করছেন। এসময় তাদের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করেছে ইউএমসি আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

এসব শিক্ষার্থীরা ইউএমসি জুটমিলের শ্রমিকদের সন্তান। এ সময় তাদের হাতে বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড দেখা যায়। এছাড়া নারীসহ শ্রমিকদের পরিবারের অন্য সদস্যরা অনশনে অংশ নেয়। অনশনে অংশ নিয়ে শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে গত পাঁচ দিনে মোট সাতজন অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এরমধ্যে তিনজনকে সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। বাকিদের অনশনস্থলে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

বাংলাদেশ রাষ্ট্রায়ত্ব পাটকল শ্রমিক ইউনিয়ন সিবিএ-নন সিবিএ সংগ্রাম পরিষদের উদ্যোগে দ্বিতীয় দফায় গত রবিবার থেকে এই অনশন কর্মসূচী পালন করছে শ্রমিকরা।

এদিকে আজ বিকেলে পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী গাজী গোলাম দস্তগীরের সঙ্গে শ্রমিক নেতাদের বৈঠকের কথা রয়েছে। বৈঠকে অংশ নিতে নরসিংদীর ইউএমসি জুটমিল শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি সফিকুল ইসলাম মোল্লার নেতৃত্বে ৫ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল ঢাকায় গেছেন।

সফিকুল ইসলাম মোল্লা বলেন, শ্রমিকরা জানিয়েছেন বৈঠক ডাকা হলেও আমরণ অনশন চলবে, যতক্ষণ না পর্যন্ত মজুরী কমিশসনসহ ১১ দফা দাবি বাস্তবায়নের লিখিত কোন আশ্বাস না মিলবে।

শ্রমিকরা জানান, তীব্র শীত উপেক্ষা করে গত রবিবার থেকে দ্বিতীয় দফার আমরণ অনশনে কাঁথা বালিশ নিয়ে অনশনস্থলে অবস্থান করছেন জুটমিলটির শ্রমিকরা। নামাজের বিরতি ছাড়া দিনরাত মিলের সামনে চটের (বস্তা) উপর বসে, শুয়ে ও ঘুমিয়ে দিন পার করছেন শ্রমিকরা। শ্রমিকদের অনেকে বয়স্ক হওয়ায় অনশন করে দুর্বল হয়ে পড়ছেন।

এর আগে দাবি বাস্তবায়নে বাংলাদেশ রাষ্ট্রায়ত্ব পাটকল শ্রমিক সিবিএ-নন সিবিএ সংগ্রাম পরিষদের উদ্যোগে ১০ ডিসেম্বর থেকে শুরু করা আমরণ অনশন ১৪ ডিসেম্বর স্থগিত করেন পাটকল শ্রমিকরা। পরে শ্রম প্রতিমন্ত্রীর আশ্বাসে শ্রমিক নেতারা তিন দফায় কর্মসূচি স্থগিত করেন। দাবি পূরণে শ্রমিকরা গত ২৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছিলেন।

এরইমধ্যে সিবিএ-ননসিবিএ নেতারা শ্রম প্রতিমন্ত্রী বেগম মুন্নুজান সুফিয়ান, পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব, বিজিএমসির চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তিন দফায় বৈঠক করেন। কিন্তু কোনো সমাধানে আসতে না পারায় শ্রম প্রতিমন্ত্রী আরো এক মাসের সময় চেয়েছেন। কিন্তু ওই এক মাস পর মজুরী কমিশন বাস্তবায়ন হবে কি না তা নিশ্চিত করেননি কেউই। আন্দোলন ছাড়া দাবি বাস্তবায়নের বিকল্প কোনো পথ দেখছেন না বলে জানান পাটকল শ্রমিকরা।