বাসার কাজের লোককে ফ্রি খাওয়াবে ‘কয়লা বাড়ি’
ছুটির দিন কিংবা কাজের ব্যস্ততার ফাঁকে একটু ঘুরতে বের হয় না, এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। বিশেষ করে শহরের মানুষের জন্য তা তো আরো জরুরি। ইট-কাঠের শহর ঢাকায় মানুষ এরকম ঘরেই বন্দি। এত সব ব্যস্ততার ফাঁকে বন্ধু-বান্ধব কিংবা পরিবারদের সাথে করে সবাই কম বেশি রেস্টুরেন্ট বা ফুড কোর্টে সময় কাটান।
কিন্তু মনের অজান্তে, কখনো ইচ্ছে করেই ভাবনা থেকে বাদ যায় বাড়ির কাজের লোকটি। তারা পড়ে থাকে ঘরের কোণে। আবার কেউ তাদের ফুড কোর্টে বা রেস্টুরেন্টে নিয়ে গেলেও তাদের বসিয়ে রাখে একটু দূরে। বাড়ির সহযোগীরা তাদের ইচ্ছে মত খেতে পারে না। পারে না বলতেও।
এসব অসহায় মানুষদের জন্য এবার ভিন্নরকম এক আয়োজন করেছে ‘কয়লা বাড়ি’। বাড়ির কাজের সহযোগীকে তারা এরকম ফ্রি খাওয়াবে।
এ বছরের গত ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসে মিরপুরের কালশীতে কাজী অ্যাসপ্যারাগাস ফুড কোর্টে যাত্রা শুরু করেছে কয়লা বাড়ি। কয়লা বাড়ি খাবারের মানের দিক দিয়েও প্রশংসা কুড়িয়েছে। এখানে মূলত সামুদ্রিক ফিস, চিকেন ও বিফ বারবিকিউ ও কাবারের আয়োজন।
কয়লা বাড়ির মালিক এটিএন বাংলার পরিচিত সাংবাদিক আদদীন সজীব জানান, ‘বাড়ির কাজের লোক সবসময় অবহেলিত থাকে। তাদের নিয়ে কেউ বের হয় না বেশিরভাগ সময়ই। অনেক দেখেছি, তারা ফুড কোর্টে বা রেস্টুরেন্টে আসলেও দূরে দূরে থাকে। ইচ্ছে করলেও মুখ ফুটে বলে না কিছু খাবে। তাই এমন একটা খাবারের স্টল দেয়ার সময় ভেবেছিলাম, কয়লা বাড়িতে পরিবারের সাথে আসা কাজের মানুষদের ফ্রি খাওয়াবো।’
শুধু তাই নয়, চারপাশের অসহায় মানুষদের নিয়েও কয়লা বাড়ির আছে ভাবনা। আদদীন সজীব জানান, ‘পথশিশু, অসহায় মানুষদের নিয়ে যদিও কোন সংগঠন বা কোন ব্যক্তি পার্টি দেন, তাহলে কয়লা বাড়ি এই মহৎ কাজে অংশ নিবে। তাদেরকে আমরা ৩০% ছাড়ে খাওয়াবো। পাশাপাশি কোন প্রতিবন্ধী বা স্পেশাল চাইল্ডদেরকেও ৩০% ছাড়ে খাওয়াবো। কেননা এরকম বাচ্চারা বা মানুষ সাধারণ যতটুকু খায়, তার চেয়ে বেশি নষ্ট করে। তাই আমি চাই, অভিভাবকদের সহযোগিতা করতে।’
এখানকার মাস্টার শেফ দেলোয়ার হোসেন খুবই অভিজ্ঞ। দীর্ঘ ৩০ বছরের বেশি সময় ধরে তিনি একাজ করছেন। এরমধ্যে ১০বছর ছিলেন স্টার কাবাবে। সেজন্য তার হাতের তৈরি সব খাবারই খুব প্রশংসা পেয়েছে শুরু কয়েকদিনেই। কয়লা বাড়ির সহযোগী শেফ সাব্বির মূলত নানের কারিগর। তার তৈরি বাটার, গার্লিক, স্পেশাল নান এরিমধ্যে সাড়া ফেলেছে পুরো ফুড কোর্টে।