টাঙ্গাইলে অসুস্থ মুক্তিযোদ্ধার সনদ ছিঁড়ে ফেলার অভিযোগ

টাঙ্গাইলে চিকিৎসকের বিরুদ্ধে এক অসুস্থ মুক্তিযোদ্ধার সনদ ছিঁড়ে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। গত বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে গতকাল সোমবার ওই মুক্তিযোদ্ধাকে দেখতে হাসপাতালে যান বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী। এ ঘটনায় ওই চিকিৎসকের শাস্তি দাবি করেন তিনি।

জানা যায়, গত ১৬ নভেম্বর কাজ করার সময় মই থেকে পড়ে আহত হন জেলার কালিহাতী উপজেলার মহেলা দক্ষিণপাড়া গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা শাজাহান ভূঁইয়া। এতে তাঁর বাম পা ভেঙে যায় ও কোমরের জয়েন্ট ফেটে যায়।পরেরদিন ১৭ নভেম্বর তাকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের ৮ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করা। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মুক্তিযোদ্ধা শাজাহান ভূঁইয়া বলেন, বৃহস্পতিবার ডা. শহীদুল্লাহ কায়সার বেডে আমাকে দেখতে আসেন। আমার ফাইলে মুক্তিযোদ্ধার সনদ দেখে রেগে গিয়ে বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধার সার্টিফিকেট এখানে কেন? সার্টিফিকেট চিকিৎসা করবে না আমরা চিকিৎসা করব।’ এই বলে সার্টিফিকেটটি ফাইল থেকে ছিঁড়ে ফেলেন ওই চিকিৎসক।

সোমবার সকালে কাদের সিদ্দিকী মুক্তিযোদ্ধা শাজাহান ভূঁইয়াকে দেখতে হাসপাতালে যান। তার খোঁজ-খবর নেন তিনি। এরপর টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক নারায়ণ চন্দ্র সাহা ও জেলা প্রশাসক শহীদুল ইসলামের কাছে অভিযুক্ত চিকিৎসকের শাস্তির দাবি করেন তিনি। কাদের সিদ্দিকী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, একজন মুক্তিযোদ্ধার ফাইল থেকে মুক্তিযোদ্ধার সনদ ছিঁড়ে ফেলা বাংলাদেশকে ছিঁড়ে ফেলার সমান। মুক্তিযোদ্ধার সনদ ছিঁড়ে ফেলেছে এ কথা শোনার আগে আমার মৃত্যু হওয়া ভালো ছিল। এখন যদি ওই ডাক্তারকে জনগণ ছিঁড়ে ফেলে তাহলে কেমন হবে?

টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক নারায়ণ চন্দ্র সাহা বলেন, চিকিৎসাধীন মুক্তিযোদ্ধার সনদ ছিঁড়ে ফেলার ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী পাঁচদিনের মধ্যে প্রতিবেদন দেবে তদন্ত কমিটি। প্রতিবেদন সাপেক্ষে ডা. শহীদুল্লাহ কায়সারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ বিষয়ে টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক শহীদুল ইসলাম বলেন, একজন মুক্তিযোদ্ধার সনদ ছিঁড়ে ফেলা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও স্বাধীনতার পরিপন্থী কাজ। অভিযুক্ত ডাক্তারের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

ডা. শহীদুল্লাহ কায়সার বলেন, ‘আমি মুক্তিযোদ্ধার সার্টিফিকেট ছিঁড়ে ফেলিনি। বিষয়টি মিডিয়ায় অন্যভাবে উপস্থাপিত হয়েছে। চিকিৎসাধীন মুক্তিযোদ্ধা শাজাহান ভূঁইয়ার ফাইলে মুক্তিযোদ্ধার সনদ দেখে আমি বলি ফাইলে মুক্তিযোদ্ধার সনদ কেন? ফাইলটি বিভিন্ন টেবিলে নিতে হয়, এখান থেকে হারিয়ে যেতে পারে। সনদটি আপনার কাছে রাখেন। এই বলে আমি ফাইল থেকে পিন খুলে সনদটি তার হাতে দেই।’ তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় মুক্তিযোদ্ধা শাজাহান ভূঁইয়া মনে কষ্ট পেয়েছেন। এটা শুনে আমি কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধার সামনে তার কাছে দুঃখপ্রকাশ করেছি। আমাকে পেশাগত ও রাজনৈতিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করছে একটি মহল।


সর্বশেষ সংবাদ